বিদেশি পেঁয়াজের অবরোধে ইতিহাসের সর্বোচ্চ দাম ছুঁয়েছে দেশি পেঁয়াজ। ভারতীয় পেঁয়াজ ১৬০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হলেও দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২৫০ টাকায়।
রাজধানীর কাপ্তান বাজারে রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকালে পেঁয়াজ কিনতে এসেছেন চটপটি বিক্রেতা মোস্তাক আহমেদ। প্রতিদিন চটপটি বানাতে দেড় কেজি পেঁয়াজ দরকার হলেও আজ কিনেছেন ১ কেজি। লাগাম ছাড়া দামের ঊর্ধ্বগতিতে পেঁয়াজের ব্যবহার কমানোর বিকল্প দেখছেন না এই ছোট ব্যবসায়ী।
এই ব্যাক্তির মতো ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া পেঁয়াজ কিনতে আসা সাধারণ মানুষের। আক্ষেপে পেঁয়াজ খাওয়া ছেড়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন অনেক ভোক্তা।
খোদ ব্যবসায়ীরাই জানান, আমদানিকারক সিন্ডিকেটের কাছে অসহায় তারা। বেশি দামে কিনে কম দামে বিক্রির সুযোগ নেই।
বিক্রেতারা বলেন, মোকাম থেকেই বেশি দামে কিনতে হয়। আর কম দামে কিনতে পারলে তো আমরা কম দামে বিক্রি করতে পারবো।
অন্যবাজারের তুলনায় মহাখালী বাজারে অপেক্ষাকৃত পেঁয়াজের দাম কম। এখানে ১৬০ থেকে ১৯০ টাকায় মিলছে দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজ। এই বাজারে নিয়মিত বাজার করতে আসা ক্রেতারা বলছেন ১৫ দিনের ব্যবধানে ৭০ টাকার পেঁয়াজ ১৯০ টাকা হয়েছে।
বাজার থেকে পেঁয়াজ কিনতে না পেরে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের অনেকেই দাঁড়িয়েছেন টিসিবির লাইনে। ৫০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনতে পেরে অনেকেই খুশি। তবে একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ পেঁয়াজ পাবেন ৪ কেজি।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিসিবি'র লাইনে দাঁড়িয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে চান না অনেকেই। তাদের দাবি দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে হস্তক্ষেপ করুক সরকার।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা বেড়ে যায়, এটি ব্যবসায়ীদের দায়িত্বশীল আচরণ নয়। ব্যবসায়ীদের বুঝতে হবে এ দেশের জনগণের জন্যই তারা ব্যবসা করেন। অবশ্যই লাভ করবেন, কিন্তু একদিনেই পণ্যের দাম বেড়ে যায় কিভাবে? যখন আমদানি বন্ধ হয়ে যায় তখনই কিছু ব্যবসায়ী এই সুযোগ নিয়ে থাকেন।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেন, ‘বাজারে মনিটরিং করে ইতিবাচক ফলাফল আসছে না।’
শনিবার সারাদেশে অভিযান চালিয়ে পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের ৬ লাখ টাকার বেশি জরিমানা করা হয়েছে।