নিলামে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকার মহিষের মাংসের সর্বোচ্চ দাম উঠেছে ৮ লাখ টাকা। সে হিসেবে প্রতি কেজি মাংস বিক্রি হয়েছে মাত্র ২৮ টাকায়। নিলামে মাংস কিনেছেন মো সোহেল রানা। অথচ বাজারে মহিষের মাংস বিক্রি হয় ৭৫০টা দরে।
এদিন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের নিলাম শেডে এ বিপুল মহিষের মাংস ছাড়াও, ৫২ টন রূপচাঁদা মাছ, ১৮ টন আদা, ১০ টন হিমায়িত মাছ নিলামে তোলা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে জমজমাট এ নিলামে অংশ নেন কয়েকশো বিডার। তাদের হাঁকডাকে মুখর হয়ে উঠে নিলাম প্রাঙ্গণ। তবে প্রশ্ন আসে কেনো এতো কম দামে মহিষের মাংস বিক্রি হলো।
কাস্টমস সূত্র বলছে, এ মহিষের মাংসের উৎপাদন তারিখ ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাস। প্যাকেটের গায়ে লেখা তারিখে যার মেয়াদ আছে আর মাত্র ৯ দিন। দীর্ঘ প্রায় ৮-৯ মাস পরও এ মাংস এনে খালাস নেয়নি নারায়ণগঞ্জের আমদানিকারক এম বি ট্রেডার্স। নানা জটিলতায় নিলামেও তুলেনি কাস্টম হাউস। তাই এ মাংসের মান আছে কিনা? তা নিয়ে সন্দিহান নিলামকারীরা।
নিলামে মাংসের ক্রেতা সোহেল রানা এখন টিভিকে জানান, নিলামে কিনলেও এ মাংস খালাস করতে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের পরীক্ষা ও সনদসহ নানা জটিলতা আছে। তাই ৯ দিনের মধ্যে এ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। এজন্য কাস্টমসের সহায়তা প্রয়োজন। এ মাংস এতিমখানা, মাদ্রাসায় কম মূল্যে বিক্রি করা যাবে। তবে বাজারে বিক্রির সুযোগ নেই।
প্রায় একই অবস্থা ১৮ টন আদারও। যার সংরক্ষিত মূল্য ১৮ লাখ ৪২ হাজার টাকা ধরা হলেও নিলামে বিক্রি হয়েছে মাত্র ৬ লাখ টাকায়। প্রতি কেজি ৩৪ টাকায়। যেখানে পাইকারি মূল্য প্রায় ১৫০ টাকা।
এছাড়া ৫২ টন রূপচাঁদার সংরক্ষিত মূল্য ধরা হয়েছে ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। বিখ্যাত স্যামন ফিশসহ নানা ধরণের ১০ টন হিমায়িত মাছের দাম ধরা হয়েছে ৩৩ লাখ ১০ হাজার টাকা।
নিলামকারীরা মনে করেন, এসব পণ্যের আমদানি মূল্য অনেক বেশি, বাজারে চাহিদাও আছে, অথচ কাস্টমসের আইনি জটিলতায় সঠিক সময়ে নিলামে তুলতে পারেনা। এতে পণ্যের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দাম পাওয়া যায়না। এতে সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে, লোকসান হচ্ছে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রারও।
নিলাম প্রক্রিয়া আরো সহজ ও প্রচার প্রচারণা বাড়ানোর দাবি জানান বিডাররা।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ কমিশনার শরীফ মোহাম্মদ বলেন, আমরা খুব দ্রুত মহিষের মাংস ছাড় কারনোর ব্যবস্থা করবো। নিলামকারী আজ(বৃহস্পতিবার) আবেদন করলে আগামী রোববারই ছাড় হবে।
চট্টগ্রাম বন্দরে নিলামের অপেক্ষায় এমন প্রায় হাজার কোটি টাকার কন্টেইনার ভর্তি পণ্য পড়ে আছে ইয়ার্ডে।