খুলনায় আবারও চালু হচ্ছে পাটকল। তবে এবার পাটকলগুলো ইজারার মাধ্যমে পরিচালনা করবে বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এরইমধ্যে দুইটি পাটকলে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে। এদিকে পাটকল চালুর খবরে খুশি শ্রমিকরা।
খুলনার দৌলতপুর পাটকলের মেশিনের চাকা ঘুরতে শুরু করেছে। শুনশান নিরবতা ছাপিয়ে আবারও কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে মিল প্রাঙ্গণে। মেশিনগুলো ঘিরে উৎপাদনে যাওয়ার ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলছে। শ্রমিকদের হাতেই চলছে কাঁচা পাট বাছাই। বিভিন্ন গ্রেডে বাছাই শেষে তা মেশিনে দেয়া হচ্ছে। নানা প্রক্রিয়া শেষে বের হচ্ছে সুতা।
শিল্পাঞ্চল খ্যাত খুলনার শিল্পের জৌলুস ২০২০ সালে হারিয়েছিল। প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার স্থায়ী-অস্থায়ী শ্রমিকদের বেকার করে এই অঞ্চলের ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করে দেয়া হয়। সাড়ে ৩ বছর বন্ধ থাকার পর ফের পাটকল চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
২০২১ সালের মাঝামাঝি পাটকলের ইজারা দিতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরইমধ্যে দরপত্রের মাধ্যমে খুলনার দৌলতপুর জুট মিল ফরচুন গ্রুপের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সাড়ে তিন কোটি টাকা অগ্রিম দিয়ে ৩০ বছরের জন্য ইজারা নিয়েছেন তারা। পরীক্ষামূলক উৎপাদন শেষে চলতি মাসেই আনুষ্ঠানিকভাবে উৎপাদনে যাবে প্রতিষ্ঠানটি। একইভাবে ইজারার মাধ্যমে যশোর জুট ইন্ডাষ্ট্রিজ ইজারা দেওয়া হয়েছে।
দৌলতপুর জুটমিলের মহাব্যবস্থাপক মো. ইসহাক আলী বলেন, আমরা আবার কাজে ফিরেছি। ইতোমধ্যে ৭০ শতাংশ মেশিন অপারেশন করা হয়েছে এবং পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন করছি।
পরীক্ষামূলক উৎপাদন চলছে খুলনার পাটকলগুলোতে। ছবি: এখন টিভি
চালু হওয়া প্রতিটি পাটকলে ২-৩ হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হবে। শ্রমিকরা বলছেন, ৩৫ বছর আমরা পাটকলে কাজ করেছি। মাঝখানে বেকার হয়ে পড়েছিলাম। আবার কাজে ফিরে আমাদের ভালো লাগছে।
পাটকল চালু হওয়ায় আবারও খুলনাঞ্চলের শিল্প খাত আরও উন্নত হবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ী নেতারা।
খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক চৌধুরী মিনহাজ উজ জামান সজল বলেন, পাটকলগুলোতে উৎপাদন শুরু হলে অনেক কর্মসংস্থান তৈরি হবে। আর মোংলা বন্দর দিয়ে পাটজাত পণ্য রপ্তানি করা যাবে।
পুরোদমে চালু হলে প্রতিটি পাটকল থেকে ১৮ থেকে ২০ টন পাটজাত পণ্য উৎপাদন হবে। দেশের চাহিদা পূরণ করে এসব পণ্য বিভিন্ন দেশে রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে।
প্রতিবেদক: রামিম চৌধুরী