প্রকৃতির বৈরিতা না থাকায় কৃষি মৌসুম খরিপ-২ এবং রবি মৌসুম জুড়ে হবে, হরেক স্বাদের সবজির চাষ। তবে সে লক্ষ্যপূরনের মতো সবজির বীজতলা করে না কৃষক। খেত খামার বা গৃহস্থের উঠোনে, সবজির রোপনে নির্ভরতা বাড়ে নার্সারিতে উৎপাদিত চারার ওপর।
সবজি চারার ক্রেতাদের মধ্যে একজন জানান, 'চারা ১ টাকা, ২ টাকা পিস। যেমন: বেগুনের চারা কিনেছি ১ টাকা পিস। এখন টমেটোর চারা কিনলাম ২ টাকা পিস নিয়েছে।'
জমির স্বল্পতার কারণে কিংবা জমিতে ফসল আছে কিন্তু জমিতে ফসল ফেলার সুযোগ নাই। সেজন্য অধিকাংশই নার্সারির উপর নির্ভর করতে হয় বলেও জানান আরও একজন চারা ক্রেতা জানান।
রাজশাহীর পবা, মোহনপুর, গোদাগাড়ী ও দুর্গাপুর উপজেলায় রাস্তার পাশে দেখা মেলে, সবজির চারা উৎপাদনের নার্সারি।
এখানে পলিথিনের তাঁবুতে ঢেকে মাটির বেড়ে উৎপাদন হয় টমেটো, পেঁপে, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মরিচ, শশা, কুমড়া, করলার মতো সবজির চারা। এ সময়ে জেলার পাঁচ উপজেলার ৬০ শতাংশ কৃষক সবজির উৎপাদন করায়, চারার যোগানে সকাল-সন্ধ্যা পরিশ্রম চলে নার্সারি শ্রমিকদের।
উৎপাদিত চারাগাছ কিনতে আসেন চাঁপাই, পাবনা, কুষ্টিয়া, নাটোরসহ বিভিন্ন জেলার কৃষক। তাতে সারি সারি মাটির বেডে ছেটানো বীজের যত্ন, অঙ্কুরিত চারার আগাছা পরিষ্কার আর বিক্রির জন্য চারা উত্তলনে ব্যস্ত সময় পার হয় নার্সারি শ্রমিকদের। তাতে অন্যান্য কাজের ফাঁকে বাড়তি আয়ের সুযোগ হয় তাদের। গাছের পরিচর্যা, নিড়ানো, বীজ দেয়ার কাজে দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরি পান শ্রমিকরা।
জেলায় শাক-সবজি উৎপাদনকারি ২১টি ছোট-বড় নার্সারিতে শীতকালিন সবজি চারার বিকিকিনি থাকে প্রায় চারমাস। এতে প্রতিটি চারা ১ টাকা থেকে ৫ টাকা দরে বিক্রি করেন নার্সারি মালিক। তাতে মৌসুমে ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার সবজির চারা বিক্রিহয়।
পবা বি.কে নার্সারির মালিক মো. সেলিম বলেন, 'এখন বাঁধাকপি, ফুলকপি, বেগুন, টমেটো, হাইব্রিড মরিচ এগুলো এখনকার জন্য প্রযোজ্য। বছর শেষে অনেক সময় ২ লাখ থেকে ৩ লাখ টাকা লাভ হয়।'
রাজশাহী রাজ নার্সারির মালিক মো. নাজমুল হোসেন বলেন, 'বারোমাসী এই ব্যবসাটা করা যায় এটা খুব ভালে ব্যবসা। যে কেউ এই ব্যবসাটি করতে পারে। যারা বেকার আছে তারা না ঘুরে ঘুরে নার্সারির ব্যবসাটা করতে পারে।'
চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে সবজির চাষ হবে ৫ হাজার ছয়শত ২৬ হেক্টর জমিতে। যা থেকে সবজির উৎপাদন ধরা হয়েছে ৯৪ হাজার ৯২০ টন।