কুয়াশা ভেদ করে সূর্যের আলো ফুটতেই ব্যস্ত গাছিরা। কুষ্টিয়া শহরতলীর বাইপাস সড়কজুড়ে রস সংগ্রহ, জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির উৎসব।
শীতের শুরুতেই গাছ ইজারা নিয়ে রস সংগ্রহে নেমেছেন শতাধিক গাছি। এরপর রস থেকে তৈরি হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী খেজুর গুড়। গুণগত মান ভালো হওয়ায় কুষ্টিয়ার গুড়ের চাহিদা দেশজুড়েই। শুধু বাইপাসের একটি বাগান থেকেই ৫ লাখ টাকার রস এবং ২০ লাখ টাকার গুড় বিক্রির আশা করছেন এখানকার গাছি ও শ্রমিকরা।
গাছিরা জানান, সেখানে প্রায় তিনশো গাছ আছে। একজনের পক্ষে তিনশো গাছ কাটা সম্ভব নয়। তাই তিনশো গাছ কাটতে তারা পাঁচজন লোক এসেছেন। এবছর গাছের দাম তুলনামূলক বেশি থাকার পরও ব্যবসায় লাভ করার আশা করছেন তারা।
এছাড়া জেলার মিরপুরের সাতবাড়িয়া এলাকায় স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে গুড় প্রক্রিয়াজাত করছেন তরুণ উদ্যোক্তা সোহাগ। ভেজালমুক্ত গুড়ের চাহিদা ছড়িয়ে যাচ্ছে দেশ-বিদেশে।
আরও পড়ুন:
উদ্যোক্তা আব্দুর রহমান সোহাগ বলেন, ‘নিরাপদ উপায়ে মাটির হাঁড়িতে সুরক্ষিতভাবে রস সংগ্রহ করে, আমরা প্রাকৃতিকভাবে খেজুরের রস ও খেজুরের খাঁটি গুড় উৎপাদন করছি।’
দর্শনার্থী ও ক্রেতারা বলেন, তারা প্রতিনিয়তই ভেজাল পান। ভেজালমুক্ত ভালো রস ও গুড় সংগ্রহ করতে তারা এখানে আসেন। এখানে তারা ভালোমানের গুড় পেয়ে থাকেন বলে জানান।
চলতি মৌসুমে জেলায় খেজুর গুড় থেকে পাঁচ কোটি টাকারও বেশি আয়ের লক্ষ্য কৃষি বিভাগের।
কুষ্টিয়া মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আউট অব বক্স কার্যক্রমের মধ্যে খেজুর গাছের চারা রোপণ ও খেজুর গাছের সংখ্যাবৃদ্ধিও একটি কাজ। খেজুরের চারা রাস্তার ধারে লাগানোর জন্য আমরা উদ্বুদ্ধ করছি। এর মাধ্যমে মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার যে পরিবর্তন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি এ দিক দিয়ে এ অঞ্চলের মানুষদের গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনবে বলে মনে করি।’
কুষ্টিয়ার গ্রামীণ অর্থনীতিতে শীতের মৌসুমে যে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা যায় তার বড় অংশজুড়েই খেজুর রস ও গুড়ের এই শিল্প।





