
'সংস্কার ও নির্বাচনের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই, দুটোই একসাথে চলতে পারে'
রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করে সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট চূড়ান্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, 'সংস্কার ও নির্বাচনের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই তাই দুটোই একসাথে চলতে পারে।'

‘ফ্যাসিস্ট কুৎসিত লোকগুলো যেন সংসদে প্রবেশ করতে না পারে’
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ২০১৮ নির্বাচনে ভোট জালিয়াতিতে জড়িত প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনতে সুপারিশ করা হয়েছে। শহীদের আত্মত্যাগ যেন বৃথা না যায় সেটি বিবেচনায় রেখেই ১৫০টি সুপারিশ করা হয়েছে।

আগে স্থানীয় না জাতীয় সংসদ নির্বাচন, বিপরীত মেরুতে সরকার-রাজনৈতিক দল!
প্রধান উপদেষ্টা একইসাথে জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার কথা বললেও রাজনৈতিক দলগুলো বলছে সংসদ নির্বাচনের আগে যেকোনো নির্বাচন দেশের রাজনীতিতে সংকট তৈরি করবে। তবে জন আকাঙ্ক্ষাকে গুরুত্ব দেয়ার কথাও বলছেন তারা। আর বিশেষজ্ঞরা বলছে, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য ছাড়া জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য তা হবে আত্মঘাতী।

সংস্কার বাস্তবায়নে রাজনৈতিক ঐক্যই মূল চ্যালেঞ্জ
সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এসব প্রস্তাব বাস্তবায়নের সম্ভাবনার পুরোটাই নির্ভর অন্তর্বর্তী সরকারের দক্ষতার ওপর। এই প্রস্তাব বাস্তবায়নে যতটা না চাপ বোধ করবে রাজনৈতিক দলগুলো, তা সহজ হবে জনমানুষকে সম্পৃক্ত করতে পারলে। দেশের স্বার্থে গণঅভ্যুত্থানের মত করে প্রতিটি পক্ষকে এক থাকার পরামর্শ দেন তারা।

'শুধু সংস্কার নয়, গণহত্যার বিচারিক কার্যক্রমও চলমান থাকবে'
সংস্কার কমিশনের দেয়া প্রস্তাবের আলোকে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতেই নীতি প্রণয়নের কাজ শুরু করবে সরকার। তবে সবগুলো প্রতিবেদন সমন্বয় করতে আরও একমাস সময় চেয়েছে সংস্কার কমিশনগুলো। এরপর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা শুরু করবে সরকার। তবে শুধু সংস্কার নয়, গণহত্যার বিচারিক কার্যক্রমও এসময় চলমান থাকবে বলে জানান আইন উপদেষ্টা।

চারটি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেয়া ঐতিহাসিক মুহূর্ত: ড. ইউনূস
রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে ভারসাম্য আনার মূল লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে সংস্কার প্রস্তাবনা পেশ করে চারটি সংস্কার কমিশন। বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা জানান, চারটি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেয়ার ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। সবপক্ষের সাথে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে বলেও জানান সরকারপ্রধান।

সংবিধান সংস্কার: গুরুত্ব পাচ্ছে গণঅভ্যুত্থান, সাংবিধানিক নাম 'জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ' করার সুপারিশ
মহান মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানকে গুরুত্ব দিয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন সুপারিশ দিয়েছে। আইনসভা হবে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট। নিম্নকক্ষে আসনসংখ্যা হবে ৪০০, গঠিত হবে সংখ্যাগরিষ্ঠ নির্বাচন পদ্ধতিতে। এর মধ্যে যেকোনো ১০০ আসনে শুধু নারী প্রার্থী থাকবে। প্রার্থী হওয়ার ন্যূনতম বয়স কমিয়ে করা হয়েছে ২১ বছর। দু'জন ডেপুটি স্পিকারের মধ্যে একজন নির্বাচিত হবেন বিরোধী দল থেকে। এছাড়া সুপারিশ করা হয়েছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পরিবর্তে 'জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ' নামের।

'রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যে ভিত্তিতেই চূড়ান্ত হবে নতুন সংবিধান'
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, 'সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব এবং রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যে ভিত্তিতেই চূড়ান্ত হবে নতুন সংবিধান। যা পাশ করবে গণপরিষদের মধ্যে দিয়ে আসা নির্বাচিত প্রতিনিধি।'

‘সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন নিয়ে নতুন পরিকল্পনা’
সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন নিয়ে নতুন পরিকল্পনা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন।

'নির্বাচনের জন্য যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন সেটা করে নির্বাচন দিতে হবে'
একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন সেটা করে নির্বাচন দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি জানান, যেন আগের মতো প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন না হয়। আজ (শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি) দুপুরে গাজীপুরের ভবানিপুরে মুক্তিযোদ্ধা কলেজ মাঠে জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

'সকল পক্ষের সাথে আলোচনা করে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করবে সরকার'
গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেয়া সকল রাজনৈতিক দল ও সকল পক্ষের সাথে আলোচনা করে জুলাই ঘোষণাপত্র সরকার প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। আজ (বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কতা বলেন।

'সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব বাস্তবায়নে গণপরিষদ গঠন করতে হবে'
একনায়কতন্ত্র রুখতে সংবিধান ও নির্বাচন ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তনের সুপারিশ করবে সংবিধান ও নির্বাচন সংস্কার কমিশন। থাকতে পারে দ্বিকক্ষ আইনসভা, প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমতা হ্রাস ও আনুপাতিক নির্বাচনের প্রস্তাব। কিন্তু রাজনৈতিক দল, সরকার ও গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রদের মধ্যে নির্বাচন আর সংস্কার নিয়ে যে টানাপড়েন তাতে এসব সংস্কার প্রস্তাবের ভবিষ্যৎ কী? রাজনীতি বিশ্লেষক বলছেন, প্রস্তাব বাস্তবায়নে গণপরিষদ গঠন করতে হবে। রাজনৈতিক দলসহ পক্ষগুলো ধৈর্য না ধরলে গভীরে সংকট পড়বে দেশ।