ক্রিকেট
এখন মাঠে
0

ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন ইংলিশ পেসার জেমস অ্যান্ডারসন

কখন কোথায় থামবেন জেমস অ্যান্ডারসন এ নিয়ে জল্পনা কল্পনার অবসান হয়েছিলো গেলো মে মাসেই। অবশেষে জিমি খেলে ফেললেন ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট। আর সেখানেও নিজের নামের প্রতি সুবিচার করে, ব্যাটসম্যানদের সুইংয়ের জাদুতে নাচিয়ে তুলে রাখলেন টেস্ট ক্যাপ।

ইংলিশ পেস কিংবদন্তি জেমস অ্যান্ডারসনের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের শেষ হলো। ক্রিকেটের তীর্থ লর্ডসে জেমস অ্যান্ডারসনের শেষের শুরুটা স্মরণীয় করে রাখতে শুরু থেকেই প্রচেষ্টা ছিলো ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের।

২০০৩ সালের ২২ মে ২১ বছর আগে এই লর্ডসেই অ্যান্ডারসনের লাল বলে যাত্রা শুরু হয়েছিল। এখানেই ক্যারিয়ারের সমাপ্তি টানলেন ১৮৮তম টেস্ট খেলতে নামা কিংবদন্তি পেসার। ম্যাচ শুরুর আগে লর্ডসের ঐতিহ্যবাহী ঘণ্টা বাজানোর জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল অ্যান্ডারসনের পরিবারকে।

এরপর মাঠের দায়িত্ব পালন করেছেন জিমির সতীর্থরা। জীবনের শেষ টেস্টে ৪ উইকেট নিয়ে ৪১ বছরের বোলার বুঝিয়ে দিলেন আরও কিছুদিন খেলতে পারতেন। শেষ টেস্টেও একটি মাইলফলক স্পর্শ করলেন তিনি। বেন স্টোকসরা আগামী দিনে অ্যান্ডারসনের অভাব বোধ করতে পারেন।

৪১ বছরের অ্যান্ডারসনের বল সামলাতেও সমস্যা পড়েছেন উইন্ডিজ ব্যাটাররা। বলের গতি আগের মতো না থাকলেও অভিজ্ঞতা দিয়ে পরীক্ষা নিয়েছেন জিমি। ৭০৪টি টেস্ট উইকেট নিয়ে ক্রিকেটজীবন শেষ করা বিশ্বের প্রথম পেসার হিসাবে টেস্ট ক্রিকেটে ৪০ হাজার বল করার মাইলফলক স্পর্শ করেছেন লর্ডসে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৯ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর কিছুটা আবেগপ্রবণ দেখিয়েছে অ্যান্ডারসনকে। চোখের কোণ চিকচিক করেছে তার। গত দু'দশক ধরে বিশ্বের সেরা ব্যাটারদের রাতের ঘুম ছুটিয়ে দেয়া অ্যান্ডারসন নিজেকে সংযত রেখেছেন। বারবার তার চোখ গিয়েছে লর্ডসের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব হাউসে থাকা পরিবারের দিকে। তাকিয়েছেন গ্যালারির দিকে। এই গ্যালারিই তাকে স্বাগত জানিয়েছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে।

জীবনে নিজেকে টেস্টের ময়দানেই সপে দিয়েছেন অ্যান্ডারসন। ধ্যানের মতন করে টেস্ট ক্রিকেটের এই ঋষি খেলেছেন ১৮৮টি লাল বলের ম্যাচে। তাই খুব একটা খেলা হয়নি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের আসর। অর্থের ছড়াছড়ি থাকা টি-টোয়েন্টি না খেলা জিমির সম্পদের পরিমাণ ২৩৫ কোটি টাকার বেশি। যে আয়ের বড় অংশটাই আসে ইংল্যান্ডের হয়ে ক্রিকেট খেলে। এছাড়াও টমাস কুক, ভ্যাম্পায়ার ক্রিকেটের মতো কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরও ছিলেন তিনি। রিয়েল এস্টেট ব্যবসাতেও ইংলিশ পেসারের বিনিয়োগ রয়েছে বলে জানা যায়।

ব্যক্তিগত জীবনেও যথেষ্ট সৌখিন এই স্টাইলিশ পেসার। চেস্টাররে তার ৩৫১৫ স্কয়ার ফিটের বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স বাড়ি রয়েছে। এছাড়াও গ্যারেজে রয়েছে দুই মিলিয়ন ইউরোর বেশি টাকার গাড়ি। যার মধ্যে বিএমডব্লিউ এমথ্রি ও অডি এ৬।

ক্যারিয়ারে অপূর্ণতা বলতে হয়তো ১০০০ আন্তর্জাতিক উইকেট না পাওয়াই রইবে তার। কারণ তিনি তো থামলেন ৯৯১ এ। সবমিলিয়ে বলাই যায় এক শিল্পীর ২২ গজের শিল্পচর্চার শেষ হলো।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর