বিস্তৃত লবণের মাঠ, যেখানে সমুদ্রের লবণাক্ত পানি রোদে শুকিয়ে পরিণত হচ্ছে লবণে। মাঠে পলিথিনের ওপর জমাটবাঁধা লবণ সংগ্রহ করছেন শ্রমিকরা। পরে মাঠে স্তূপ করে রাখা সেই লবণ তোলা হচ্ছে ট্রাকে কিংবা নদীতে অপেক্ষমাণ নৌকায়। পরবর্তীতে অপরিশোধিত এসব লবণ কারখানায় পরিশোধনের পর যাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে।
কক্সবাজারের ইসলামপুর লবণ শিল্প এলাকার একদিকে যখন মাঠ থেকে লবণ তোলার ব্যস্ততা, তখন উল্টো চিত্রও চোখে পড়ে। এখনও অনেক জায়গায় সদ্য লবণের মাঠ তৈরিতে নেমেছেন শ্রমিকরা। চলছে মাঠ সমানের কাজ।
কিন্তু যারা আগেভাগেই উৎপাদনে নেমেছেন অপ্রত্যাশিত দরপতনে তাদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। গত মৌসুমে কারখানায় প্রতি মণ লবণ সাড়ে ৪শ থেকে ৫শ টাকায় বিক্রি হলেও এবার তা নেমেছে ৩শ' থেকে সাড়ে ৩শ টাকায়।
দেশের মোট চাহিদার ৯০ শতাংশেরও বেশি লবণ উৎপাদন হয় কক্সবাজার জেলায়। কক্সবাজারের ৯ উপজেলা ও চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে প্রায় ৪০ হাজার চাষি লবণ উৎপাদনে জড়িত। তাদের লবণচাষে সহায়তা করতে সহজ শর্তে ঋণ সহায়তাসহ সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে লবণ শিল্প উন্নয়ন কার্যালয়।
কক্সবাজারের লবণ শিল্পের উন্নয়ন কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক মো. জাফর ইকবাল ভূঁইয়া বলেন, ‘প্রান্তিক চাষিদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। প্রত্যেক চাষিকে আমরা সহজ শর্তে ৫০ হাজার টাকার ঋণ প্রদান করছি। এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সব তফসিলভুক্ত ব্যাংকগুলোর থেকে ঋণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এখানেও লবণকে কৃষি পণ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।চাষিদের একর প্রতি ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা ঋণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
দেশের ৬৩ বছরের ইতিহাসে গত মৌসুমে সর্বোচ্চ প্রায় ২৪ লাখ টন লবণ উৎপাদন হয়। চলতি মৌসুমে রেকর্ড ২৬ লাখ টন লবণ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য অন্তত এক হাজার ৯শ' কোটি টাকা।