চায়ের এমন বেহাল অবস্থায় লোকসানে চা চাষি বিস্তীর্ণ সবুজ এলাকা পঞ্চগড়ের চা বাগানে চলছে ভরা মৌসুম। আর সেই সাথে, জেলা শহরে পার্সেল ও কুরিয়ার সার্ভিসে মাধ্যমে দৈনিক অন্তত ৫০০ থেকে ৬০০ বস্তা চা চলে যাচ্ছে কালোবাজারে, যার বেশিরভাগই অবৈধ। এর সাথে জড়িত কিছু অসাধু কারখানা মালিক, দালাল ও চা ব্যবসায়ীরা। কালোবাজারে এভাবে চা বিক্রি হওয়ায় সংকটে সমতলের চায়ের চাষিরা।
চা চাষিদের একজন বলেন, ‘প্রতিনিয়ত কালোবাজারে চা বিক্রি হচ্ছে পঞ্চগড় থেকে। ফলে আমাদের ভালো যে চা সেটা নিলামে যাচ্ছে না।’
কঠোর নজরদারির অভাব ও প্রশাসনের দুর্বলতায় বেড়েছে কালোবাজারে চা কেনা-বেচা। এভাবে প্রতি মাসে অন্তত এক থেকে দেড় কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিডার ফোরাত জাহান সাথী বলেন, ‘আমাদের বেশি দামে চা কিনতে তো সমস্যা নেই। আমরা ভালো মানের চা কিনবো বেশি দামে বিক্রি করবো।’
এ বছর ১১ টি নিলামে জেলার তৃতীয় নিলাম বাজারে চা বিক্রি হয়েছে ৩ লাখ কেজিরও কম। কালোবাজারে কম দরে চা বিক্রি করায় কোটি কোটি টাকার চা অবিক্রিত থাকছে বলে অভিযোগ কারখানা মালিকদের।
পঞ্চগড় মরগেন টি ফ্যাক্টরির নির্বাহী পরিচালক নাওজেশ আলী চিশতী বলেন, ‘কিছু মহল এই সমতলের চা শিল্পকে ধ্বংস করার জন্য এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে।’
এ অবস্থায় অবৈধ চা পাতা বিক্রি ঠেকাতে নড়ে চড়ে বসেছে প্রশাসন। পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবেত আলী বলেন, ‘আমরা বাজার মনিটরিং করে দেখবো চায়ের দাম কেমন যাচ্ছে।’
বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘চা শিল্প পঞ্চগড়ে এগিয়ে যাবে। বৈধ ব্যবসার পাশে দাঁড়াতে হবে আর অবৈধ ব্যবসাকে রুখে দিতে হবে।’
গত দুই দশকে পঞ্চগড়ে প্রায় ১০ হাজার একর জমিতে চা চাষ সম্প্রসারিত হয়েছে। পাশের জেলাগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ছে চা চাষ। তাই কালোবাজারে চা বিক্রি বন্ধ করতে না পারলে, ধ্বংসের মুখে পড়বে সমতলের সম্ভাবনাময় চা শিল্প- এমনটাই শঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।