প্রতিহিংসার রাজনীতিতে সৌহার্দ্য বয়ে আনে রমজান

প্রতিহিংসার রাজনীতিতে সৌহার্দ্য বয়ে আনে রমজান | এখন
0

সময়ের সাথে প্রসার ঘটেছে ইফতারকেন্দ্রীক রাজনীতির। রমজানজুড়ে রাজনৈতিক দলগুলো ইফতার আয়োজনের মধ্যদিয়ে সৌহার্দ্য বিনিময়ের পাশাপাশি দলকে সংগঠিত করার কাজ করেন। রাজনীতিবিদরা বলছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় সংগঠন ও বিভিন্ন পেশাজীবীদের সাথে সমন্বয় বাড়াতে ভূমিকা রাখবে ইফতার আয়োজন। এর মাধ্যমে জনসংযোগ বাড়ানো ও তৃণমূলকে শক্তিশালী করার পরিকল্পনেও রয়েছে দলগুলোর।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ঐক্য যেন এক দুর্লভ বিষয়। বাকযুদ্ধ, অসহিষ্ণুতা, সহিংসতা এমনকি প্রতিপক্ষকে হত্যার মতো ঘটনা রাজনীতির পরতে পরতে।

তবে প্রতিহিংসার রাজনীতিতে সৌহার্দ্য বয়ে আনে রমজান। এ সময় রাজনৈতিক অঙ্গনে ইফতার মাহফিল এক ধরনের জনসংযোগ। রমজানজুড়েই চলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এই কার্যক্রম।

প্রতি বছর রোজায় বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে থাকে। এর মাধ্যমে রাজনৈতিক কার্যক্রম এগিয়ে নেয়ার পাশাপাশি থাকে দলকে চাঙ্গা করার নানা পরিকল্পনাও।

এসব আয়োজনে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন দলীয় নেতারা। জোরালো হয় দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বন্ধন। চলে সমর্থক ও পেশাজীবীদের সাথে সম্পর্কোন্নয়নের কাজও।

রাজনীতিবিদরা বলছেন, এমন আয়োজনের মধ্য দিয়ে তৈরি হয় সম্পর্কের সেতুবন্ধন। দলীয় ঐক্য জোরালো হওয়ার পাশাপাশি পেশাজীবী, বুদ্ধিজীবী, সমালোচকসহ নানা শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে রাজনীতিবিদদের সৌহার্দ্য বাড়াতে সহায়ক হয় ইফতার মাহফিলের মতো আয়োজন।

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ‍ভূঁইয়া মঞ্জু বলেন, ‘অনেক রাজনৈতিক দল ব্যাপকভাবে ইফতার মাহফিল, ইফতার পার্টি, চক্র নানাধরণের আয়োজন করেছে। আমি আশাবাদী এটা আমাদের সামাজিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যকে আরো সুদৃঢ় ও উন্নত করবে।’

সময়ের সাথে জনপ্রিয় হয়েছে ইফতার কেন্দ্রীক রাজনীতির। তবে বিগত ১৬ বছরে অনেক রাজনৈতিক দলই স্বস্তির সাথে ইফতার আয়োজন করতে পারেনি। জামায়াতের কেন্দ্রীয় এই নেতা বলেন, এবার কর্তৃত্ববাদের রাহুমুক্ত হয়ে সব দলই নিজস্ব সামর্থ্য ও দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী ইফতার আয়োজন করবে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমী নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘দেশ ও জাতির কল্যাণের জন্য যেভাবে ইফতার মাহফিলে দোয়া হয়, চ্যালেঞ্জগুলো সামনে রেখে আলোচনা হয়। দেশ ও জাতির এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে করণীয় নিয়ে আজকাল ইফতার মাহফিলে আলোচনা হয়। মাহফিলগুলো এখন কিছুটা হলেও পলিটিসাইজ হয়েছে।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, রমজানকে ঘিরে ইফতারের আয়োজন নতুন নয়। নির্বাচন আসন্ন, তাই রমজান মাসে ইফতার আয়োজনের মাধ্যমে জনসংযোগ বাড়ানো ও তৃণমূলকে শক্তিশালী করতে পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেন, ‘সামনে একটা নির্বাচন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জনগণের কাছে যেতেই হবে এবং আমাদের কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করতে হবে সেটা যে কোনো প্রসেসেই হোক।’

ইফতার আয়োজনে যে রাজনীতির ছোঁয়া, তা নির্বাচনী ডামাডোলে কতটা প্রভাব ফেলবে, তা হয়তো সময়ই বলে দেবে। তবে রাজনীতির পাশাপাশি রমজানের পবিত্রতাকেও ধারণ করার আহ্বান রাজনীতি সংশ্লিষ্টদের।

এএইচ