নেত্রকোণার পাহাড়ি সীমান্তবর্তী উপজেলা দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা। ধান নির্ভর জেলা হলেও পাহাড়ি ও অসমতল ভূমি থাকায় চাষাবাদেও রয়েছে ভিন্নতা। ব্যয় খরচ কমানোর পাশাপাশি জমিগুলো পুরোপুরি চাষের আওতায় আনতে মাল্টাসহ চাষ হচ্ছে বিভিন্ন ফল।
এই যেমন দেড় একর জায়গাজুড়ে করা হয়েছে ফলের বাগান। বিভিন্ন ফলের পাশাপাশি প্রায় ৩শ' বারি মাল্টার গাছ রয়েছে এখানে। রোপণের মাত্র ৩ বছরেই ফলন আসতে শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে প্রায় ২ লাখ টাকার মাল্টা। চলতি বছর আরও বেশি বিক্রির আশা করছেন বাগান মালিক।
মাল্টা চাষি আলাল উদ্দিন বলেন, ‘এই ফলের বাগানের পিছনে বিনিয়োগ ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার বেশি লাগবে না। ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার ফল পেলে বাড়তিটা আমার লাভ থাকবে।’
একইভাবে দুর্গাপুর, কলমাকান্দা ও পূর্বধলা উপজেলার কয়েক শতাধিক কৃষক মাল্টার চাষ করছেন। অনাবাদি জমিগুলোতে ফলের বাগান হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। একটি গাছে কমপক্ষে ৩০ থেকে অর্ধশতাধিক ফল ধরে। জানুয়ারিতে ফুল আসার পর অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে ফলটি বিক্রির জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। ধানের তুলনায় ফল চাষের খরচ কম ও ফসল বিক্রি করে লাভবান হওয়ায় কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে।
কৃষকদের মধ্যে একজন জানান, আশেপাশে দুই এক গ্রামে আমরা পরামর্শ নিয়েছি ৫ থেকে ৬ কাটা খেত করবো। আরও একজন জানান, ফলের রঙ সুন্দর আসছে কিন্তু ফলন তুলনামূলক কম আসছে।
উৎপাদিত মাল্টা স্থানীয় বাজারগুলোতে বিদেশি ফলের সাথে সমান তালে বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা ফলের তুলনায় দাম তুলনামূলক কম বলে ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। প্রতি কেজি মাল্টা বিক্রয় হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে।
বিক্রেতারা বলছেন, হলুদ মাল্টার চেয়ে দেশি সবুজ মাল্টা বেশি বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন বাজারগুলোতে বিক্রি হচ্ছে কয়েক টন মাল্টা। চাষ বাড়াতে পরামর্শ দিচ্ছে নানা কৃষি বিভাগ।
বিক্রেতাদের মধ্যে একজন জানান, বাইরে গাছ থেকে অর্গানিক ভাবে পেড়ে নিয়ে আসি। আর প্রতিদিনেরটা প্রতিদিন বিক্রি করি।
নেত্রকোণা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, ‘কৃষকদের প্রশিক্ষণ এবং উপকরণ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। যাতে করে মাল্টা চাষের সম্প্রসারণ হয়।’
চলতি বছর জেলার ৩ উপজেলায় প্রায় ৫২ হেক্টর জমিতে মাল্টার চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৬শ ৫০ টন। যার বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা।