আজ (মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কমিটি প্রধান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গণি। সেখানেই এ তথ্য জানা গেছে।
স্বরাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘বিদ্যুতের লুজ কালেকশন থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে। ভবনের ডিজাইন ও বাতাসের গতির কারণে আগুন ছড়িয়ে গেছে।’
তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য বুয়েটের অধ্যাপক ড. মাকসুদ হেলালী বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বিশেষজ্ঞ দলের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে খুঁটিনাটি জানতে চান এবং ভবিষ্যতে করণীয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘আগুনের সোর্স একটাই তবে টানেলের কারণে অন্যদিকে গিয়েছে। ফলে ছয়তলা শেষ না করে সাততলার আগুন নেভানো সম্ভব ছিল না। বাইরে থেকে দুই জায়গায় আগুন মনে হলেও এটা আসলে ইন্টারকানেক্টেড বলে এমন হয়েছে।’
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রাসেল জানান, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিস্ফোরক ব্যবহারের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা বলেন, আগুনে পুড়ে নষ্ট হওয়া ফ্লোর মেরামত যোগ্য। নথিপত্রের রুমে অগুন লাগেনি। তেমন কোন নথিপত্র নষ্ট হয়নি। পুড়ে যাওয়া নথিপত্র মন্ত্রণালয়গুলো অডিট করে জানাবে। এছাড়াও অধিকতর তদন্তের জন্য কিছু আলামত ইন্দোনেশিয়া ও সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে।
তদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তরের পর সচিবালয়ে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এছাড়াও আগামী ১০ দিনের মধ্যে অগ্নি নিরাপত্তার সুপারিশ দিতে বিশেষজ্ঞ তদন্ত টিমকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
গত ২৬ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) দিবাগত রাত ১টা ৫২ মিনিটে সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুনের খবর পাওয়ার সাথে সাথে ফায়ার সার্ভিসের ৮টি এবং পরে ১৯টি ইউনিট নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। আগুন সচিবালয় ভবনের ৬, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ে।
প্রায় ১০ ঘণ্টা পর সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নেভানোর কাজে যোগ দিয়ে সড়কে ট্রাক চাপায় ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মীও নিহত হন।
গতকাল (সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর) অগ্নিকাণ্ডের প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা থাকলেও বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তদন্ত কমিটির বৈঠক শেষে আজ (মঙ্গলবার) জমা দেয়ার কথা জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও তদন্ত কমিটির প্রধান ড. নাসিমুল গণি।