ইসলামপুর উপজেলার দরিয়াবাদ গ্রাম। এই গ্রামের কাঁসারি পাড়ায় এখনও টিকে আছে কাঁসাশিল্প। অনিল কর্মকারের বংশ পরম্পরার পেশা ছিল শিল্প। কারখানায় ভোরের রোদ ফোটার সাথে শুরু হয় শ্রমিকদের দিনভর পরিশ্রম। কাঁসার চাহিদা থাকলেও কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি ও শ্রমিক সংকটে এই শিল্প এখন বিলুপ্তির পথে।
দেশে সর্বপ্রথম ঢাকার ধামরাই থেকে এই শিল্প ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে । কাঁসা শিল্পীরা তাদের পেশাগত জীবন পারিবারিকভাবে গড়ে তোলায় একই পাড়া-মহল্লায় বসবাস করতেন। তাই তাদের বসবাসকারী এলাকা কাঁসারি পাড়া নামে পরিচিতি লাভ করে। দরিয়াবাদ গ্রাম তারি এই নিদর্শন।
প্রথমে মাটির ফর্মা তৈরি করে গলিত কাসাঁ ঢালাইয়ের কাজ করা হয়। এরপর হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে তৈরি করা হয় কাঁসার থালা, বাটি,গ্লাস,জগ ও কলসিসহ অন্যান্য কারুকাজ। প্রতিটি থালা বাজারে বিক্রি হয় কেজি প্রতি ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫শ টাকায়। কঠোর পরিশ্রমের পরও সীমিত আয় হওয়ায় পেশা ছাড়ছেন অনেকেই।
তবে এখনো বিয়েবাড়ি ও সনাতনী ধর্মীয় উৎসবে কাঁসার জিনিসপত্রের চাহিদা রয়েছে। পর্যটকরাও এই পণ্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন স্মৃতি হিসেবে।
কাঁসাশিল্পের ঐতিহ্য ফেরানো পাশাপাশি এই শিল্পের সাথে জড়িত মালিক ও শ্রমিকদের আধুনিক প্রযুক্তির সাথে টিকে থাকতে কাজ করছে ইসলামপুর উপজেলা প্রশাসন।
জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘আদিকাল থেকে যারা এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তারা বাজারজাতকরণ ঠিক মতো করে উঠতে পারছে না। আমরা উদ্যোক্তাদের উদ্বুদ্ধ করছি তাদের যদি কোনো প্রকার ঋণ ও আর্থিক সহায়তা লাগে তাহলে উপজেলার প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাশে থাকার চেষ্টা করব।’
যন্ত্রপাতিসহ কাঁচামাল আমদানির ব্যাপারে সরকার উদ্যোগ নিলে এই শিল্প বিলুপ্তি থেকে রক্ষা পাবে বলে মনে করেন কাঁসা শিল্পের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টরা।