কুয়াশা মাখা সকালে বাঙালি জাতির বীরত্বের মহানায়কদের স্মরণ করতে স্মৃতির এ সৌধে পুরো বাংলাদেশ। রক্তের দামে লেখা ইতিহাস ভোরের এই রোদের মতই রঙিন।
একাত্তরে নয় মাসের রক্ত লেখায় রচিত মহাকাব্য পূর্ণতা পেয়েছে ১৬ ডিসেম্বর। বিজয়ের সেই আনন্দ বছরে ঘুরে হাজির হয় স্মৃতির সৌধ থেকে দেশের প্রতিটি কোনায় কোনায়।
বিজয় দিবসের ভোরে রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে যখন গর্বের মিনার সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয়, জাতীয় স্মৃতিসৌধ বর্ণিল লাল সবুজের পতাকায়।
সবার মনে প্রাণে ও পোশাকে আগাগোড়া যেন বাংলাদেশকে ধারণ করা হয়েছে। বেলা বাড়তেই ১০৮ একর গর্বের এ মিনার পরিণত হয় জনসমুদ্রে। তরুণরা বলছেন মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণাই ছিল ২৪ এর তারুণ্যের শক্তি।
একজন তরুণ বলেন, '১৯৭১ সালের বিজয় আর ২০২৪ সালের চেতনা এ দু'টি মিলিয়ে আগামীতে দেশটাকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে সবাই যে সম্মান ডিজার্ভ করে সে সম্মানটুকু যেন পায় এটাই আমাদের প্রত্যাশা।'
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসানের পর প্রথম বিজয় দিবস। স্মৃতির মিনারে তাই স্মরণ করা হয়েছে ২৪'র শহীদদেরও।
স্মৃতির মিনারে আসা একজন বলেন, 'আমাদের কারও মধ্যে বৈষম্য থাকা যাবেই না। এ জিনিসের কারণেই ভেদাভেদ তৈরি হয়। পরে নানা ধরনের দাঙ্গা হয়।'
অন্য একজন বলেন, 'বিজয় মানে শুধু উlযাপন করা না। যাদের কারণে বিজয় এসেছে তাদের স্মরণ করে এ বিষয় ধরে রাখা।'
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এসেছে একাত্তরের শহীদদের বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে।
বিশিষ্টজনরা বলছেন, যাদের রক্তে উপর দাঁড়িয়ে এদেশ, তাদের শ্রদ্ধা জানাতে হলে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, 'আমাদের ৭১ থেকে ৯০ হয়ে ২৪ পর্যন্ত বহু মানুষের রক্তের ঋণ আছে। প্রত্যাশা তারা নিজেরাই ঠিক করে দিয়েছেন। আমাদের সামনে এখন একটাই বড় মাপের লক্ষ্য সেটা হলো বৈষম্যহীন এবং গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণ।'
দেশ স্বাধীন হয়েছে যাদের ত্যাগ আর তিতীক্ষায়, তারাও ফুল দিয়ে স্মরণ করছেন বন্ধু ও সহযোদ্ধাদের।
আজ এদেশের সূর্য সন্তানদের স্মরণ করছে পুরো জাতি। ৫৩ বছর পার করে ৫৪ তে পা দেয়া বাংলাদেশ হয়ে উঠুক আরও সমৃদ্ধ। রক্তের দামে কেনা এ দেশ এগিয়ে যাক ৭১ ও ২৪ এর চেতনা ধারণ করে এমনটাই প্রত্যাশা আগত সকলের।