সংস্কৃতি ও বিনোদন
দেশে এখন
0

প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজের প্রয়াণ

চলে গেলেন বাংলা সাহিত্যের প্রেম ও দ্রোহের কবি কবি হেলাল হাফিজ। আজ (শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। বাংলা একাডেমি পুরষ্কারপ্রাপ্ত এ কবির বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।

জাতীয়ে প্রেসক্লাবে আগামীকাল (শনিবার) সকাল ১০টায় প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও সকাল ১১টায় বাংলা একাডেমিতে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সবশেষ তার জন্মস্থল নেত্রকোণায় তৃতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানা গেছে।

১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোণা জেলার আটপাড়া উপজেলার বড়তলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হেলাল হাফিজ। তার বাবা খোরশেদ আলী তালুকদার পেশায় ছিলেন স্কুলশিক্ষক, আর মা কোকিলা বেগম গৃহিণী।

১৯৬৫ সালে নেত্রকোণা দত্ত হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং ১৯৬৭ সালে নেত্রকোণা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন তিনি । ওই বছরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন এ কবি।

ছাত্রাবস্থায় ১৯৭২ সালে তিনি তৎকালীন জাতীয় সংবাদপত্র দৈনিক পূর্বদেশে সাংবাদিকতায় যোগদান করেন। ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন দৈনিক পূর্বদেশের সাহিত্য সম্পাদক। ১৯৭৬ সালের শেষ দিকে তিনি দৈনিক দেশ পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক পদে যোগদান করেন। সর্বশেষ তিনি দৈনিক যুগান্তরে কর্মরত ছিলেন।

ষাটের দশকের উত্তাল সময়ে তার লেখালেখি শুরু হয়। তবে প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশিত হয় দেশ স্বাধীন হওয়ারও অনেক পরে, ১৯৮৬ সালে। ২৬ বছর পর ২০১২ সালে প্রকাশিত হয় তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘কবিতা একাত্তর’।

‘এখন যৌবন যার, মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়/ এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’- উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সময় তার রচিত কবিতা ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’র এ পঙক্তি দুটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে যেমন প্রেরণা জুগিয়েছিল, তেমনি এখনও প্রেরণা জুগিয়ে চলেছে প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে।

কবি হেলাল হাফিজের উল্লেখযোগ্য কবিতার মধ্যে রয়েছে— ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’, ‘দুঃসময়ে আমার যৌবন’, ‘অস্ত্র সমর্পণ’, ‘বেদনা বোনের মতো’, ‘ইচ্ছে ছিল’, ‘নিখুঁত স্ট্রাটেজি’, ‘দুঃখের আরেক নাম’, ‘প্রত্যাবর্তন’, ‘অশ্লীল সভ্যতা’, ‘কবিতার কসম খেলাম’, ‘কবিতার কসম খেলাম’, ‘উপসংহার’, ‘সম্প্রদান’, ‘একটি পতাকা পেলে’, ‘কবি ও কবিতা’, ‘ফেরিওয়ালা’ এবং ‘অমীমাংসিত’ প্রভৃতি।

১৯৮৬ সালে প্রকাশিত তার কবিতার বই ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশিত হয়। কবিতার জন্য ১৯৮৫ সালে নারায়ণগঞ্জ বৈশাখী মেলা উদযাপন কমিটির কবি সংবর্ধনা, ১৯৮৬ সালে যশোহর সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার, ১৯৮৭ সালে আবুল মনসুর আহমদ সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৯ সালে নেত্রকোণা সাহিত্য সমাজ, কবি খালেদদাদ চৌধুরী সাহিত্য পদক সম্মাননা,বাসাসপ কাব্যরত্ন এবং কবিতায় তিনি ২০১৩ সালের বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।

এএইচ