সিলেটের জনপ্রিয় পর্যটন স্পট সাদা পাথরের পাশেই ভোলাগঞ্জ-ছাতক রেললাইনের লোডিং স্টেশন বা বাংকার। এখানে প্রায় ৩৫৯ একর জমি, অবকাঠামোসহ রেলের নানা স্থাপনা ও যন্ত্রপাতি থাকলেও এখন অস্তিত্ব আছে কেবল ১৫ থেকে ২০ একর জায়গার। দিন বা রাত প্রশাসনের অনুপস্থিতে এখানে চলে অবৈধভাবে পাথর তোলার মহাযজ্ঞ। পাথর তুলতে তুলতে জায়গাটি পরিণত হয়েছে পরিত্যক্ত এক বিরানভূমিতে।
বিগত কয়েকদিনে এত লুটপাট হয়েছে যে এখন সংরক্ষিত এই এলাকার মাটি আর বালি ছাড়া কিছুই নেই। স্থানীয়রা বলছেন প্রশাসনের গাফিলতিতেই এমনটা হয়েছে।
ইতোমধ্যে রেলওয়ে রোপওয়েরও গুরুত্বপূর্ণ মালামালসহ প্রায় শতকোটি টাকার মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা। গাছ কেটে, মাটি খুঁড়ে তছনছ করে রাখা হয়েছে সরকারি এই সংরক্ষিত অঞ্চল। সম্প্রতি পরিবেশ ও সরকারি সম্পদ রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণে জেলা প্রশাসনের সাথে রেলওয়ে সংরক্ষিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের কয়েকজন প্রতিনিধি। তারা বলছেন সম্পদ বেহাত হওয়ার পেছনে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অসহযোগিতাই প্রধান কারণ।
বাংলাদেশ রেল মন্ত্রণালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘প্রশাসন ও বিজিবির সাহায্যের কারণে দুর্বৃত্তরা এটি করার সাহস পেয়েছে।’ বাংলাদেশ রেল মন্ত্রণালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি আশিকুর রহমান রায়হান বলেন, ‘আমরা স্থানীয় ছাত্রদের মাধ্যমে দুইজন দুর্বৃত্তকে ধরতে সক্ষম হয়েছি।’
যদিও স্থানীয় প্রশাসন বলছে ৫ আগস্টের পর যে সকল সুযোগ সন্ধানীরা এই অপকর্ম করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এখন থেকে সম্পদ সুরক্ষায় সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছেন তারা।
ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মহি উদ্দিন বলেন, ‘জায়গাটা যেহেতু রেলওয়ের বা সরকারের এখানে আরএনবি আবারো পাহারায় থাকবে, তারা তিন শিফটে ডিউটি করবে। আর যেসব অবকাঠামো নষ্ট হয়েছে সেগুলো আমরা পুনর্নির্মাণ করে দেবো ’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবিদা সুলতানা বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে যত ধরনের সাহায্য দরকার তা দেয়া হবে। আশা করি, যে হামলা হয়েছিল তা যেন আগামীতে না হয় সেজন্য যা পদক্ষেপ দরকার তা আমরা নেবো।’
লুটপাটের ফলে দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত রয়েছে দেশের একমাত্র রজ্জুপথ ভোলাগঞ্জ-ছাতক রোপওয়ে।