আড়াই বছরের তাসকিয়া। শুক্রবার আসলেই বাবার কোলেই খুনসুটিতে মাতেন এই ছোট্ট শিশু। তবে এবারের শুক্রবারটি তার কাছে একেবারে বিবর্ণ। অবুঝ তাসকিয়া জানে না আর কোনোদিন বাবার কোলে ওঠা হবে না তার। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আদালত পাড়ায় ঘাতকদের ধারালো অস্ত্র কেড়ে নিয়েছে তাসকিয়ার বাবা অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলামের প্রাণ।
আজ নিহত সাইফুলের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতিতে আসেন ধর্ম ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা। প্রথমেই সাইফুলের কবর জিয়ারত করেন তারা। এরপর হত্যাকাণ্ড ইস্যুতে কথা বলেন দুই উপদেষ্টা।
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘হত্যাকারী যেই হোক কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। ভিডিও ফুটেজ দেখে ইতোমধ্যেই অনেককেই শনাক্ত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে একটি গোষ্ঠী দেশ-বিদেশে ষড়যন্ত্র করছে।’
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, ‘বাংলাদেশে হাজার বছর ধরে সব ধর্মের মানুষের সহ-অবস্থান। যা কোনোভাবেই নষ্ট হতে দেয়া যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টার সুষ্ঠু তদন্ত হয়ে বিচার হবে। তারা উপযুক্ত শাস্তি পাবে। সবার প্রতি আহ্বান থাকবে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে।’
পরে সাইফুল ইসলামের বাসায় আসেন উপদেষ্টারা । কথা বলেন তার পরিবারের সাথে। এ সময় ভরণপোষণের জন্য পরিবারের সদস্যদের হাতে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দেয়া নগদ ৭ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন তারা। পর্যায়ক্রমে আরও ১ কোটি দেয়ার ঘোষণা দেন ধর্ম উপদেষ্টা।
এদিকে সন্তানের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চান নিহত অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলামের বাবা জামাল উদ্দিন। হত্যাকারীরা যতই প্রভাবশালী হোক তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি স্বজনদের।
নিহতের বাবা জামাল উদ্দিন বলেন, ‘যারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে এবং এর পিছনে যারা আছে সবার ফাঁসি চাই আমি।’
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আদালত পাড়ায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর ইস্যুতে সংঘর্ষে জড়ায় তার অনুসারীরা। এসময় নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ।