এখন রূপকথা মনে হলেও দখল-দূষণে মৃতপ্রায় এই খালেই একসময় চলাচল করতো মালবাহী বাণিজ্যিক নৌকা। শহরতলীর দাউদপুল এলাকায় ভিড়তো ছোট-বড় নৌযান। সবমিলিয়ে জেলায় নৌ বাণিজ্যের অন্যতম রুট ছিল এই খাল।
দখল-দূষণের কবলে জেলার ১৪৪টি খাল ও শাখা নদীর অবস্থা এখন বেহাল। যার বিরূপ প্রভাব পড়ছে ভাটির জনপদে। চলতি বছরের আগস্টে ভয়াবহ বন্যার সাক্ষী এই জনপদ, ঝরেছে প্রাণ, দুর্ভোগে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ বন্যা দীর্ঘায়িত হওয়ার অন্যতম কারণ খাল-নদী দখল ও দূষণ।
দফায় দফায় উদ্যোগ নিয়েও খাল ও শাখা নদী থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। কাগজ কলমে থাকলেও ৬০ শতাংশ খালেরই অস্তিত্বই নেই।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদ শাহরিয়ার বলেন, ‘আমরা খনন করি, উচ্ছেদও করে থাকি। বর্তমানে এগুলো চিহ্নিতকরণের কাজ চলমান রয়েছে। যেখানে যেখানে খনন করা প্রয়োজন সেসব জায়গা চিহ্নিত করছি।’
ফেনী সদরের দাউদপুর ও পাগলিছড়া খালের পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলে প্রতিনিয়ত চলছে দখল। দূষণের পাশাপাশি বন্ধ হচ্ছে পানি প্রবাহ। একই হাল বাকি খালগুলোরও। সামান্য বৃষ্টিতেই ডুবে যায় পেট্রোবাংলা, আরামবাগ ও পশ্চিম উকিলপাড়া।
ফেনী পৌরসভার প্রশাসক গোলাম মো. বাতেন বলেন, ‘খাল খনন, সংস্কার এটা পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন। পৌরসভার পক্ষ থেকে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের বিষয়টি দেখা হবে। আর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ দখলদার উচ্ছেদ করা। অর্থাৎ সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে এটা করা প্রয়োজন।’
ফেনীর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোসাম্মৎ শওকত আরা কলি বলেন, ‘জলাধার ভরাটের বিষয়ে আমরা যদি কোনো নিউজ পাই বা দৃষ্টিতে আসে তখন আমরা বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।’
দখল-দূষণের থাবায় ফেনীর সোনাগাজীর ৫৬টি, দাগনভূঞার ৫২টি, সদর উপজেলার ৩৯টি, পরশুরামের ৪টি, ছাগলনাইয়ার তিনটি ও ফুলগাজীর সব খালই এখন মৃতপ্রায়।