২০২৪ সালের আগস্টে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় তলিয়ে যায় কুমিল্লা, ফেনী ও চট্টগ্রাম। পানিবন্দী হয়ে পড়ে লাখ লাখ মানুষ। বন্যায় ডুবে যায় ঘরবাড়ি, ফসলের মাঠ, ভেসে যায় পশু পাখি, কোটি কোটি টাকার মাছ। শুধুমাত্র ফেনীতেই ঘর হারিয়ে নিঃস্ব হন ১৮শ পরিবার, আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাড়ে ৬ হাজার ঘর।
সে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের একজন রহিমা খাতুন। পেশায় পরিবহন চালক স্বামী দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বেকার। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে গত ৬ মাস থেকেছেন অন্যের ঘরে।
নৌবাহিনীর কল্যাণে এখন দোতলা নতুন ঝকঝকে ঘর পেয়েছেন সে রহিমা। যে ঘরে শোভা পাচ্ছে সামান্য সহায় সম্বল। এমন প্রায় ৮৫ টি ঘর উপহার পেয়েছেন ফেনীর গৃহহীন অসহায় মানুষ।
নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, এসব ঘর দোতলা ও বিশেষায়িত। ভবিষ্যতে বন্যা হলে উপরে উঠে থাকা যাবে এমন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। গৃহ নির্মাণকাজে অন্যান্য সংস্থা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
চট্টগ্রাম বাংলাদেশ নৌবাহিনী চট্টগ্রামের এরিয়া কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত, অত্যন্ত দুর্দশাগ্রস্ত পরিবারের মাথা গোঁজার জন্য একটি মানসম্পন্ন কাঠের বাড়ি নির্মাণ করে দেয়ার মাধ্যমে ফেনী সদর ও ফুলগাজী উপজেলার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করে। আমাদের এ উদ্যোগ অনুসরণ করে বিভিন্ন সংস্থ, প্রতিষ্ঠান আরো উদ্যোগী হয়ে আপনাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবেন।’
ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আপনাদের এ কাজগুলো ভবিষ্যতে আরো চলতে থাকবে, আপনারা মানবতার কল্যাণে কাজ করবেন এবং আপনাদের দেখাদেখি আরো যে সংগঠন রয়েছে তারা সবাই কাজ করেছে।’
জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ অফিসের হিসেবে, বন্যায় শুধুমাত্র ফেনীতেই মৎস্য, কৃষি অবকাঠামোতে ক্ষয়ক্ষতি প্রায় ২ হাজার ৫শ কোটি টাকা। এ অঞ্চলে সরকারের পরিকল্পিত সহযোগিতা চান স্থানীয়রা।
২০২৪ সালে দেশের ১১ জেলায় বন্যায় পানিবন্দী হয়ে পড়ে ৮ লাখ ৫৪ হাজার পরিবার, ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৫৪ লাখ মানুষ। মারা যায় ৫৯ জন।