ইতালি প্রবাসী অধ্যুষিত জেলা হিসেবে অনেকের কাছে পরিচিত শরীয়তপুর-মাদারীপুর জেলা। উন্নত জীবনের আশায় এ অঞ্চলের মানুষের মাঝে দিন দিন বাড়ছে ইতালি যাওয়ার প্রবণতা। তবে, ইউরোপ যেতে গিয়ে নিঃস্বও হয়েছেন অনেকে। অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে কারো হয়েছে সলিল সমাধি। অনেকেই আছেন নিখোঁজ। তবুও বারবার অবৈধ পথ বেছে নিচ্ছেন অনেকেই।
৮ মাস ধরে মাদারীপুরের সূর্যমণি গ্রামের সাইফুল ইসলামের খবর না পেয়ে শোকাতুর তার মা। মনে হাজারো উৎকণ্ঠা নিয়ে অবুঝ শিশু সন্তানকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন স্ত্রী। পরিবারের সদস্যরা জানান, ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে পাশের জেলা শরীয়তপুরের রাশেদ খান-টুন্নু খানকে দিয়েছিলেন ১৫ লাখ টাকা। লিবিয়া যাওয়ার পর পাচারকারী চক্রের চাপে দিতে হয় আরো ৫ লাখ টাকা। এরপরও মেলেনি সাইফুলের খোঁজ।
মাদারীপুরের সাইফুলের মতো শরীয়তপুরের আংগারিয়ার এক ইউনিয়নের ১৮টি পরিবারের অনেকটা একই গল্প। ঋণের বোঝার পাশাপাশি স্বজনদের সন্ধান চাইলে উল্টো মামলার হুমকি দিচ্ছে পাচারকারী চক্র। উপায় না পেয়ে দুই জেলার ২৪ ভুক্তভোগী পরিবার করেছেন সংবাদ সম্মেলন।
তবে, অভিযুক্ত রাশেদ-টুন্নুর বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায়নি কাউকে। ঘর তালাবদ্ধ থাকলেও প্রতিবেশীরা জানান তাদের প্রতারণার কথা।
এ বিষয়ে কিছুই জানা নেই বলে দাবি পুলিশের। তবে, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস পুলিশ সুপারের।
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মানবপাচারের মতো ঘৃণ্য অপরাধের কোনো খবর যদি আমাদের কাছে আসে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। এক্ষেত্রে আপনারা যে ঘটনাটা বলেছেন সেটা আমাদের নলেজে আসে নি। এখনো কেউ আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ করেনি। কেউ অভিযোগ করলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
শরীয়তপুরের এক ইউনিয়নের ১৮ পরিবার আর মাদারীপুরের ৬ পরিবারের কাছ থেকে প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা নেয়ার অভিযোগ প্রভাবশালী দালালচক্রের বিরুদ্ধে।