একসঙ্গে ৫৭ সেনা অফিসারসহ ৭৪ জনকে হত্যা।
আধাসামরিক বাহিনীর সদর দপ্তরের ভেতরে চলা এই হত্যাকাণ্ড, তৎকালীন ঐ বাহিনীর ডাল ভাত কর্মসূচি ঘিরে একটি বিদ্রোহ মাত্র, নাকি পরিকল্পিত তা নিয়ে বিতর্ক শেষ হয়নি আজও।
দেড় দশক আগে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের এই হত্যাকাণ্ড ঘিরে নাম বদলে যায়, আড়াইশ বছরের পুরোনো সংস্থা বাংলাদেশ রাইফেলসের।
বিশেষ আদালতের আদেশে, চাকরি হারায় বাহিনীর ১৮ হাজার সদস্য। তদন্তের মধ্যে রিমান্ড-হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগও তুলেছেন বিডিআরের ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ কেউ।
এতদিন প্রকাশ্যে এনিয়ে কথা বলতে দেখা না গেলেও ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর কর্মসূচি নিয়ে রাস্তায় নামতে দেখা গেছে তাদের।
শনিবার রাজধানীর রমনায় বিডিআর কল্যাণ পরিষদ নামের সংগঠনের একটি আয়োজনে যোগ দিতে দেখা যায়, এই হত্যাযজ্ঞে নিহত তৎকালীন বিডিআর মহাপরিচালক শাকিল আহমেদের ছেলে ব্যারিস্টার রাকিন আহমেদকে।
বিডিআরের হাতে হত্যার শিকার বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তার সন্তানকে পাশে পেয়ে আবেগআপ্লুত দেখা যায় এই কল্যাণ পরিষদের পরিবারদের। যারা তাদের বক্তৃতায় এটাই বোঝাতে চেয়েছেন, ঐ হত্যাকাণ্ড রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের বড় একটি ষড়যন্ত্র যার শিকার হয়েছেন সাধারণ বিডিআর সদস্যরা।
এখানে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সম্ভাব্য ৫টি কারণের মধ্যে, সেনাবাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ন করাসহ দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্রের দিকেও ইঙ্গিত করেন বক্তারা। এই ঘটনা পুনঃতদন্তে স্বাধীন কমিশনের যে দাবি তোলা হয়, তাতে সমর্থন দেন তৎকালীন বিডিআর ডিজির সন্তান ব্যারিস্টার রাকিন আহমেদ। অভিযোগ তোলেন, ষড়যন্ত্র এখনও চলছে।
তিনি বলেন, ‘সরকারকে একটি কমিশন গঠন করতে হবে। আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি। ভয়াবহ বিষয় আওয়ামী লীগের দোসররা এখনো সরকারে আছে। এখনো অংশীদার হিসেবে আছে।’
ব্যারিস্টার রাকিন আহমেদ বলেন, দয়া করে আমাদের ফোর্স করবেন না আঠারো হাজার পাঁচশো সৈনিক রাস্তায় নামতে। আমার বিশ্বাস আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ভদ্রলোক। তিনি সঠিক পদক্ষেপ ও সিদ্ধাস্ত নেবেন বলেই মনে করি। উনি জনস্বার্থে কাজ করবেন। প্রতিবেশী রাষ্ট্র বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র করছে। যে ছাত্র-জনতার মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।’
অনুষ্ঠানে ৯টি দাবি তুলেছে বিডিআর কল্যাণ পরিষদ। এর মধ্যে, পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে বিদ্রোহ না বলে, পরিকল্পিত হত্যা হিসেবে চিহ্নিত করা, চাকরিচ্যুত নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের চাকরি ফিরিয়ে দেয়া, ৫৭ কর্মকর্তাসহ নিহত ৭৪ জনকে শহীদ খেতাব দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা উল্লেখযোগ্য।