২০১২ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য প্রথমবারের মতো সার্চ কমিটির প্রচলন করেন। সে সময় ৪ সদস্যবিশিষ্ট অনুসন্ধান কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন আপিল বিভাগের তৎকালীন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। ওই কমিটির সুপারিশে গঠিত হয় কাজী রকিব কমিশন।
২০১৭ সালে একই প্রক্রিয়ায় দ্বিতীয় অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। পুনরায় প্রথম কমিটির প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বেই ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির অসুন্ধানেই বেরিয়ে আসে নুরুল হুদা কমিশনের সদস্যদের নাম।
এরপর ২০২২ সাল। কাজী হাবিবুল আওয়াল কমিশনকে যারা খুঁজে বের করেন, কারা ছিলেন তারা!
সর্বশেষ এই সার্চ বা অনুসন্ধান কমিটির প্রধান ছিলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। ৬ সদস্যের ওই কমিটিতে বাকি ৫ সদস্য ছিলেন বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, তৎকালীন মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসেন, সৈয়দ শামসুল হকের স্ত্রী আনোয়ারা সৈয়দ হক।
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পর ড. ইউনূসের নেতৃত্বে যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে, সে সরকার কবে নির্বাচনের আয়োজন করতে যাচ্ছেন? কারা হবেন নির্বাচন কমিশনার? এবং নেই নির্বাচন কমিশনারদের খুঁজে বের করতে সার্চ কমিটিতে কারা দায়িত্ব পাবেন?
এসব আলোচনার মধ্যেই আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানান, নির্বাচনমুখী যাত্রা শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচন কমিশন গঠনে আজ-কালের মধ্যে জারি করা হবে সার্চ কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপন।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠনের সার্চ কমিটি গঠন হয়ে গেছে। শিগগিরই প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হবে। এর মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচনমুখী যাত্রা শুরু হয়ে গেছে।’
আজ (মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠকের পর আসিফ নজরুল আরও বলেন, সার্চ কমিটি হয়ে গেলে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। আর নির্বাচন কমিশন গঠন করা হলে কাজ শুরু হবে স্বচ্ছ ভোটার তালিকা তৈরির।
আসিফ নজরুল বলেন, ‘এর সঙ্গে ভোটার তালিকাও হালনাগাদ করা হবে বলে। ভোটার তালিকা নিয়ে মানুষের মাঝে প্রচুর প্রশ্ন রয়েছে। গত নির্বাচন ছিল পুরা ভুয়া, তাই মানুষের আর ভোটার তালিকা নিয়ে মাথাব্যথা ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘এবার অসাধারণ একটা নির্বাচন হবে। এবার তো আমরা ভুয়া নির্বাচন করবো না।’
এদিকে সার্চ কমিটিতে কোন কোন ক্যাটাগরিতে সদস্য রাখা যেতে পেরে, সেজন্য একটা প্রস্তাবনাও প্রস্তুত করে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।