শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে দুই ধরনের বক্তব্য দেয়ায়, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণের যে দাবি রাজপথে গড়িয়েছে তার জেরে মোটামুটি এটা স্পষ্ট, একটি কর্তৃত্ববাদী শক্তিকে হটাতে যেভাবে এক হয়েছিলো ছাত্র-জনতাসহ রাজনৈতিক শক্তিগুলো, গণঅভ্যুত্থানের আড়াই মাসের মাথায় সেভাবে সেটি আর নেই।
পতিত সরকারের আমলে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতির অপসারণ বিষয়ে একটি রাজনৈতিক ঐক্য গড়তে যখন ছুটে বেড়াচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আর জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা, তখন রাজধানীতে একটি মতবিনিময় সভার বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি অপসারণের ইস্যুটিকে সন্দেহের চোখেই দেখেছেন বিএনপির এই নেতা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আজকে অনেক রকমের কনস্টিটিউশনাল ক্রাইসিস শুরু করার জন্য চেষ্টা চলছে, পায়তারা চলছে। সেই কনস্টিটিউশনাল ক্রাইসিস যদি হয়, রাষ্ট্রীয় সংকট যদি হয়, রাজনৈতিক সংকট হয়, তার পেছনে কী শক্তি আছে তা আমাদের আগেই অ্যানালাইসিস করতে হবে।’
এবং তার এই বক্তব্যটি সামনে এলো সেই বৈঠকের একদিন পর, যে বৈঠকে তার দলের নীতি নির্ধারকরাই এই একই ইস্যুতে কথা বলেছেন, আন্দোলনরত পক্ষগুলোর সঙ্গে। তাই স্বভাবতই সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন ছিলো, চূড়ান্তভাবে যদি প্রধান এই রাজনৈতিক শক্তিটি রাষ্ট্রপতি অপসারণে একমত না হয়, তখন কী হবে।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের কাছে এখনো এমন কোনো তথ্য আসে নি যে এটিই চূড়ান্ত। তাদের ফোরামে কথা বলেই এটি চূড়ান্ত হবে। ইতোমধ্যেই আপনারা দেখেছেন চুপ্পুর অপসারণ বিষয়ে এটি বিএনপির সাংগঠনিক কোনো ব্ক্তব্য না। যেটা আমরা দেখেছি যে, বিভিন্ন নেতৃস্থানীয় পর্যায় থেকে বিভিন্ন জন বিভিন্ন ধরনের মতামত দিয়েছে। কিন্তু আমরা বিএনপির আনুষ্ঠানিক বক্তব্যের অপেক্ষা করবো। তাদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আমরা প্রতিক্রিয়া জানাবো।’
কাজী জাফরের জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে ১২টি দলীয় জোটের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির শীর্ষ নেতাদের এই বৈঠক হয়, খিলগাঁওয়ে। প্রায় আড়াই ঘণ্টার বৈঠক শেষে দুই পক্ষ জানায়, সাবেক সরকারের আমলে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের ব্যাপারে তারা একমত, তবে পরবর্তীতে রাষ্ট্রপ্রধান কে হবেন, এ নিয়ে সংলাপ চায় ১২ দল।
১২ দলীয় জোটের জোট প্রধান মোস্তফা জামান হায়দার বলেন, ‘আমরা এ প্রশ্নে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আপনারাও আলাপ করেন আমরাও আলাপ করবো। আমরা চাই সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কোনো ডিসপিউট কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছাড়া পুরো জাতি একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে।’
এদিন রাজধানীর বিজয়নগরে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গেও বৈঠক করেন রাষ্ট্রপতির অপসারণে ঐক্য গঠনের কর্মসূচিতে নিয়োজিত ছাত্রদের দুইটি পক্ষ।