দেশে এখন
0

নেত্রকোণায় আকস্মিক বন্যায় ক্ষতি ৩১৫ কোটি টাকার ফসল

নেত্রকোণায় আকস্মিক বন্যায় ভেসে গেছে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর রোপা আমনের খেত। এতে ক্ষতি হয়েছে ৩১৫ কোটি টাকার ফসল। কৃষকরা বলছেন, আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এর প্রভাব পড়বে বোরো আবাদেও। যদিও কৃষি বিভাগ বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে সহায়তার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

নেত্রকোণায় বোরো মৌসুমের পর সবচেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হয় আমন মৌসুমে। এসময়ে বৃষ্টি থাকায় সেচের খরচ বাঁচে কৃষকদের। তবে এবার অতিবৃষ্টি ও বন্যায় ভেসে গেছে কৃষকের স্বপ্নের ফসল।

অক্টোবরে শুরুতেই অতিবৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে একে একে তলিয়ে যায় দুর্গাপুর, কলমাকান্দা, পূর্বধলা ও সদরের নিম্ন এলাকার ফসলি মাঠগুলো। পানি বাড়তে থাকায় উজানের ঢল রূপ নেয় বন্যায়। এখন পানি নেমে গেলেও সবুজে ঘেরা ফসলের মাঠ রূপ নিয়েছে পঁচা স্তুপে। বন্যার পানিতে পুরোপুরি ডুবে থাকায় পচে নষ্ট হয়ে গেছে ধানের জমিগুলো। এমন চিত্র নেত্রকোনার অন্তত পাঁচ উপজেলার।

চলতি মৌসুমে দুর্গাপুরে প্রায় ১৬ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে আকস্মিক বন্যায় নষ্ট হয়ে গেছে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমির ফসল। যার ফলে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় শত কোটি টাকা। এছাড়াও একই অবস্থা কলমাকান্দা, সদর, পূর্বধলা ও বারহাট্টা উপজেলার। এই ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩১৫ কোটি টাকা। ফসল নষ্ট হওয়ায় ঋণ পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক।

নেত্রকোণায় অতিবৃষ্টি ও বন্যায় ভেসে গেছে কৃষকে ফসল। ছবি: এখন টিভি

আমন মৌসুম শেষ হওয়ার কারণে নতুন করে জমিগুলোতে এখন আর চারা রোপণ কিংবা ধান চাষ করার কোন সুযোগ নেই। তাই এবার চাল কিনে খেতে হবে কৃষকদের। পাশাপাশি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সামনের বোরো মৌসুমে ধানের আবাদ নিয়েই কৃষকদের মাঝে শঙ্কা রয়েছে। তবে বোরো মৌসুমের আগেই বীজ, সার সরবরাহ করে চাষাবাদে সহযোগিতা করা গেলে আমনের ক্ষতি কিছুটা পোষানো যাবে বলে মনে করছেন কৃষকরা।

জমির পেছনে সব পুঁজিই খরচ করেছেন কৃষক। হাতে আর কিছু না থাকায় হতাশ কৃষক।

কৃষি বিভাগ বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত জমিগুলোতে স্বল্পকালীন সবজি বা সরিষা আবাদের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।

নেত্রকোণার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, 'সরকার থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিটা পুষিয়ে নেওয়ার জন্য সরকার কর্তৃক পুনর্বাসন বা প্রণোদনার সহায়তা আসবে। আমরা সেই সরকারি নির্দেশনা পেলে সেই ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক যারা আছে তাদেরকে অগ্রাধিকারের বিরুদ্ধে সহযোগিতা করার জন্য কাজ করবো।'

চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় এক লক্ষ ৩৫ হাজার ৯শ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও আশ্বিনের আকস্মিক বন্যায় ভেসে গেছে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমি ফসল। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৭৫ হাজার ৭শ' কৃষক।