দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্যখাতে সর্বনিম্ন বাজেট বরাদ্দ হয় বাংলাদেশে। সেই অপ্রতুল বাজেটের বড় অংশ চলে যায় দুর্নীতিবাজদের পেটে।
এই পুরোনো কথা বারবার বলার পরও দুর্নীতিবাজদের চেনার পরও স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতিগ্রস্তদের ধরতে ব্যর্থ হয়েছে পুরোনো ও নতুন প্রশাসন।
জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাস্থ্যের দুর্নীতি বিষয়ক আলোচনা সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন সুমন শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি বলেন, 'সবার আগে অধিদপ্তরে যে দুর্নীতি আছে। যেগুলো সুস্পষ্ট তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। উদ্দেশ্যটা হচ্ছে অন্যদেরকে শেখানো তুমি যদি এই কাজ করো তাহলে তোমাকে এই পরিণতি ভোগ করতে হবে।'
ড্যাব, এনডিএফসহ স্বাস্থ্যখাত সংশ্লিষ্ট ও রাজনীতিবিদরা অংশ নেন আলোচনায়। চিকিৎসকের কমিশন বাণিজ্য থেকে শুরু করে প্রকল্পের লুটপাট সবই এসেছে বক্তব্যে। এক্ষেত্রে দুর্নীতিবাজদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান বক্তারা।
সুস্বাস্থ্যে বাংলাদেশের সভাপতি ডা. কাজী সাইফউদ্দীন বেন নূর বলেন, 'রোগীরা কেন বিদেশে চলে যায়? ডাক্তার এবং রোগীর মধ্যে আস্থার অভাব। ডাক্তারদের কেন নিরাপত্তা নেই, ডাক্তাররা কেন কর্মস্থলে থাকেন না। কারিকুলাম নিয়ে কথা এসেছে। অনেক অসংখ্য মেডিকেল কলেজ তৈরি হচ্ছে। যার ফলে নিম্নমানের চিকিৎসক তৈরি হচ্ছে।'
সীমাহীন দুর্নীতির কারণেই সহায় সম্বল বেঁচেও প্রকৃত চিকিৎসা পায় না মানুষ। দুর্নীতির দুষ্ট চক্রে দালাল ও বিদেশিদের যোগশাজশে দেশের বাইরে সেবা নিতে বাধ্য হতে হয় বলে মত বিশ্লেষকদের।
জনস্বাস্থ্য বিশ্লেষক ডা. এম এইচ চৌধুরী লেলিন বলেন, 'দেশে বর্তমানে যে চিকিৎসা সেবা রয়েছে তার ৫৫ শতাংশ বেসরকারি খাতে। তাদের দেখাশোনা এবং নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটা বেসরকারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করা হোক।'
বাজেট বাড়ানোর আগে স্বাস্থ্যখাতের দায়িত্বশীল পদে সৎ মানুষের পদায়নের আহ্বান জানান কেউ কেউ।
দুর্নীতি বন্ধ না হলে স্বাস্থ্যখাতের করুণ দশা বদলাবে না বলে মনে করেন সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠকের বক্তারা। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য কমিশন গঠন করার প্রস্তাবে ঐকমত্য পোষণ করেন সবাই।