শিক্ষক ও আবাসিক সংকট সঙ্গী করে একপ্রকার ঢিঁমেতালে ১৬ বছর পার করা এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। তত্বাবধায়ক সরকারের হাতধরে ২০০৮ সালে যাত্রা শুরু করা বিশ্ববিদ্যালয়টি ভুগেছে বাজেট সংকটে। এ কারণে গবেষণায় অপ্রতুলতা, আবকাঠামোগত অনুন্নয় আর অস্থিরতা যেন এ ক্যাম্পাসের নিত্যসঙ্গী।
এমন প্রেক্ষাপটে ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে উত্তরে অন্যতম বড় এ বিদ্যায়তন। ৭৫ একর ক্যাম্পাসজুড়ে যাদের স্বপ্ন বিস্তারের বিচরণ তাদের কন্ঠ জুড়েও প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির মিশ্রিত আবেগ।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, 'এই উৎসবমুখর পরিবেশটা বজায় রেখে যেন বিদ্যা অর্জনের উদ্ভাবনের একটা দিক আছে সে দিকে আমরা যেতে পারি, আমাদের ভিসি স্যারের কাছে আবেদন থাকবে।'
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বর্ণিল আয়োজনের শুরুতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক উদ্বোধন করেন তথ্য উপদেষ্টা। চতুর্থ উপাচার্যের পাশ করা নকশা, পঞ্চম উপাচার্যের শুরু করা কাজের এ ফটক উদ্বোধন হলো ষষ্ঠ উপাচার্যের হাত ধরে। উদ্বোধন শেষে সুসজ্জিত র্যালি প্রদক্ষিণ করে পুরো ক্যাম্পাস। পরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন তথ্য উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটনাকে উগ্রবাদ হিসেবে প্রচার করতে চায় ভারতের কয়েকটি গণমাধ্যম। এ সময় গুজবে কান না দিয়ে দেশের মানুষকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, 'ভারত চায় যে বাংলাদেশে একটা উগ্রবাদ চলছে সেটা দেখাতে। এতে তার দেশের যে উগ্রবাদ সেটি পুষ্ট হয়। ফলত সে ধরনের অপপ্রচার সবসময়ই ছিল। তবে আমাদের দেশেও যে ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটছে, এতে আমাদ রনিজেদেরও উচিত নিজেদের দিকে তাকানো। সে বিষয়গুলো যেন কখনও না ঘটে এবং ঘটলে আমরা দ্রুত সে ঘটনার আইনী পদক্ষেপ নিচ্ছি।'
গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম জানান, ফ্যাসিস্ট সরকার রাজপথ থেকে বিতাড়িত হয়ে ফেসবুকে সরব হয়েছে। দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, 'পতিত যে ফ্যাসিবাদী শক্তি, রাজপথ থেকে তারা পরাজিত হয়ে এখন অনলাইনে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করছে। ফলে আমরা যেন সচেতন হই। কোনো মিথ্যা তথ্য এবং গুজবে বিশ্বাস না করি।'
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে ছয়টি অনুষদের আওতায় ২২টি বিভাগে পাঠদান কার্যক্রম চলছে। সাড়ে আট হাজার শিক্ষার্থীর অনুকূলের শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ২০০ জন। ক্যাম্পাসে আবাসিক সুবিধা ভোগ করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্র ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী। বৈশ্বিক স্ট্যান্ডার্ডে যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ২২ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে একজন শিক্ষক থাকার কথা সেখানে বেরবিতে এই হার ৪৪ জনে একজন। পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বৈষম্য দূর হবে এ প্রত্যাশায় অঞ্চলের মানুষসহ শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।