দেশে এখন
0

নদীভাঙনে দিশেহারা বরিশালবাসী, থমকে আছে গ্রামীণ অর্থনীতি

বরিশালে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে নদীভাঙন। ইতোমধ্যে বিলীন হয়েছে রাস্তা ঘাট, ফসলি জমি আর বসতবাড়ি। ভিটে হারিয়ে দিশেহারা অনেক পরিবার। যাতে গ্রামীণ অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। ভাঙ্গন রোধে নানা পরিকল্পনা ও কার্যক্রম চলমান রয়েছে, বলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া সন্ধ্যা, সুগন্ধা আর আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাঙনে বসত ভিটা, ফসলি জমি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে নদী তীরবর্তী মানুষ। বিলীন হয়ে যাচ্ছে সংযোগ সড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

এলাকার হালিমা বেগম। নদীতে সব কিছু হারিয়ে ১ বছর ধরে আশ্রয় নিয়েছেন রাস্তার পাশে। আয়ের কোন পথ না থাকায় খেয়ে না খেয়ে চলছে সংসার। তার মত আরও একজন আলতাফ হোসেন। ছোট বেলা থেকেই দেখে আসছেন এই ভাঙ্গা গড়ার খেলা। নিজের ঘরটি আড়িয়াল খাঁ নদী গ্রাস করেছে গত ৬০ বছরে ৬ বার। তবে এবার নদী ভাঙ্গনে কবলে পড়লে বেঁচে থাকার আর কোন সম্বল থাকবে না বলে জানান তিনি।

আড়িয়াল খাঁ, কীর্তনখোলা ও সন্ধ্যা নদীর পাশের ৩টি গ্রামের প্রায় ১ হাজার পরিবার এখন ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত পার করছেন। গত ৫ বছরে এই নদী গ্রাস করেছে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হেক্টর ফসলী জমি। বিলীন হয়েছে প্রায় ২০০ ঘর। ১৯৭১ সাল থেকে এই নদী ভাঙ্গন শুরু হলেও এখন পর্যন্ত কোন কার্যকরী ও স্থায়ী পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে জানান স্থানীয়রা।

প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এবারও এর ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়নি। গত ১০ বছরে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে এখানকার দুটি বড় বড় গ্রাম। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই নদী ভাঙ্গন রোধ করা না গেলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এই গ্রামটিকেও গ্রাস করে নেবে এই আড়িয়াল খাঁ নদী।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, নদী ভাঙ্গনের ফলে গ্রামের মানুষ যেমন সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ছে একইভাবে প্রভাব পড়ছে শিক্ষা ও গ্রামীণ অর্থনীতিতে। আর পরিবেশবিদরা বলছেন, দিন দিন গতি প্রবাহ হারিয়ে তীব্রতা বাড়ছে নদী ভাঙনে।

নদী ভাঙ্গন রোধে পর্যায়ক্রমে কাজ করা হবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। স্থায়ীভাবে রোধে প্রতি কিলোমিটার কাজ করতে খরচ হয় প্রায় ৭৫ কোটি টাকা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, বরিশাল জেলায় বড় ৯টি নদীর প্রায় ১০৮ কিলোমিটার অংশ ক্ষতিগ্রস্ত। যারমধ্যে ২৫ কিলোমিটারের কাজ চলমান রয়েছে।

এএইচ