দেশে এখন
0

নির্বাচনের সময়সীমার ধারণা পাওয়া গেলেও সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের

অন্তর্বর্তী সরকারকে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। নির্বাচন আয়োজনে প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ শেষ করতে দেড় বছর সময় লাগতে পারে বলেও জানান সেনাপ্রধান। এদিকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়সীমা নিয়ে একটি ধারণা পাওয়া গেলেও সংস্কার প্রক্রিয়া শেষ না করে নির্বাচন দিলে তার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

৫ আগস্ট, দেশের ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মুখে এদিন প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান স্বৈরাচার শেখ হাসিনা। এরপর ৮ আগস্ট গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার।

গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে দেশের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কঠোর অবস্থানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এরইমধ্যে গেল ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সেনাপ্রধান বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে কথা বললেও সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) মুখোমুখি হন আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আলোচনায় উঠে আসে গণতন্ত্রে ফেরার প্রক্রিয়া। সেনাপ্রধান বলেন, '১৮ মাসের মধ্যে যাতে নির্বাচন হতে পারে, সে জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলো সম্পন্ন করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে পূর্ণ সহযোগিতা করবে সেনাবাহিনী।'

সাক্ষাৎকারে সামরিক বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করার একটি রূপরেখাও দেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। সেনাবাহিনীকে পেশাদার রাখার অঙ্গীকার করেন তিনি।

গেল ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকেই এই সরকারের মেয়াদ নিয়ে শুরু হয় তর্ক-বিতর্ক। সবারই জানার আগ্রহ কতদিন থাকবে অন্তর্বর্তী সরকার? রয়টার্সকে সেনাপ্রধানের দেয়া সাক্ষাৎকারটি প্রচারের পর প্রথম কোন শীর্ষ ব্যক্তির কাছ এনিয়ে আনুমানিক একটা সময় পাওয়া গেল। তবে, এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে পাওয়া যায়নি কোনও বক্তব্য। দেশে জনপ্রতিনিধিত্ব টিকিয়ে রাখতে গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচনের বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করছেন বিশ্লেষকরা।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ বলেন, 'এই সরকারকে সময় দিতে সবাই রাজি। সবাই সংস্কার চাই। আরেকটা কথা বলা হয়, এই সরকার হারলে আমরা সবাই হারবো। সেনাপ্রধান একটা কথা বলেছে এই সরকার ১ থেকে দেড় বছর বা ১৮ মাস থাকবে। এইটা একটা ইন্ডিকেটর। আমার মনে হয় এইটা দুই বছর হতে পারে। ১৮ মাসের জায়গায় ২৪ মাস। এইটা একটা ডেট লাইন হিসেবে এখন নেয়া যেতে পারে।'

তবে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের মূললক্ষ্য বাস্তবায়ন, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ সুগম করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনার যে প্রতিশ্রুতি ড. ইউনুস দিয়েছেন তার জন্যও পর্যাপ্ত সময় দেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। বলেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকারকে কাজ এগিয়ে নিতে হবে।

তিনি বলেন, 'সেনাপ্রধানের বক্তব্য কারণে আমরা সুনিদিষ্ট একটা সময় বলতে পারছি। এই সময়ের মধ্যে সরকার তার কাজগুলো করবেন। মানুষের যে প্রত্যাশা হয়েছে এবং ডে জঞ্জাল তৈরি হয়েছে তা ঠিক না করে এমন অবস্থায় নির্বাচন দিলে নির্বাচন কি সুষ্ঠভাবে হবে।' 

তবে অন্তর্বর্তী সরকার বেশি সময় থাকলে গণহত্যাকারীরা আবারও পুনর্বাসন হতে পারে এমন শঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না এই বিশেষজ্ঞ। এছাড়া সংস্কারে শুধু সরকার নয়, নাগরিক সমাজের পাশাপাশি সবার সঙ্গবদ্ধ চেষ্টা দরকার বলে মনে করেন তিনি।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর