বঙ্গোপসাগরের কূল ঘেঁষা বরগুনার তালতলী উপজেলায় জনবসতি বাড়লেও পিছিয়ে পড়েছে চিকিৎসা সেবাখাত। প্রায় ২ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবার বিপরীতে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছেন মাত্র ৪ জন চিকিৎসক।
২০০৩ সালে চালু হওয়া ২০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি বর্তমানে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও কার্যক্রম চলছে ২০ শয্যার লোকবল নিয়ে। নানা জটিলতায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি নতুন ভবনটিও। এছাড়া, চালু হয়নি অপারেশন থিয়েটার কিংবা পরীক্ষাগারের কার্যক্রম। এতে সরকারের রাজস্ব আয় যেমন কমছে তেমনি অন্য হাসপাতালে সেবা নিতে রোগীকে গুণতে হচ্ছে বাড়তি অর্থ।
স্থানীয়দের মধ্যে একজন জানান, অনেক সময় ডাক্তার দেখাতে আমাদেরকে পটুয়াখালী, বরিশাল এসব জায়গায় যেতে হয়। এটা অতিরিক্ত ব্যয়বহুল।
ডাক্তার কম থাকার কারণে নরমাল রোগীদেরও পটুয়াখালী যেতে হয় বলে জানান একজন রাখাইন।
রোগীর স্বজনরা জানান, রোগীর আইসিইউ এর প্রয়োজন হয় এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতি না থাকার কারণে ডাক্তার আমাকে রেফার করছে বরিশালে।
লোকবল সংকটে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে রোগীরা হচ্ছেন ভোগান্তির শিকার। যদিও কর্তৃপক্ষ বলছেন, লোকবল সংকট থাকায় নিজ উদ্যোগে করছেন পরিছন্নতার কাজ। প্রসূতি ও শিশুসহ প্রতিদিন ১০০-১৫০ জন রোগীর চিকিৎসা সেবা দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন নার্স ও চিকিৎসক।
তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মাহফুজা আক্তার বলেন, 'আমরা আমাদের দিক থেকে চেষ্টা করতেছি। কোনো রোগী ফেরত যাচ্ছে না। রোগীদের ইমার্জেন্সি সার্ভিস দিচ্ছি। যথেষ্ট লোকজনের অভাব আছে। তারপরেও আমাদের দিক থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতেছি।'
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি পুরোপুরি চালু না হওয়ায় আশপাশে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সেখানেও দেওয়া হচ্ছে নিম্নমানের সেবা। তবে, তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি পুরোপুরি চালু করতে পদক্ষেপের আশ্বাস জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের।
বরগুনার সিভিল সার্জন ডাঃ প্রদীপ চন্দ্র মন্ডল বলেন, 'মোট যে চিকিৎসক থাকতে হবে তার এক চতুর্থাংশ চিকিৎসক নিয়ে কার্যক্রম পরিচালিত হয়। চতুর্থ শ্রেণির জনগণের সংকট। আমরা এসব তথ্য উপরে কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।'