যশোরের চৌগাছার হাজরাখানা গ্রামে প্রায় তিন'শ বছর ধরে আধ্যাত্মিক সাধক পীর বলুহ দেওয়ানের স্মরণে বসে বলুহ মেলা। বাংলা সনের ভাদ্র মাসের শেষ সপ্তাহ এলেই তার রওজা শরীফ ঘিরে এই মেলার আয়োজন করা হয়। মেলা উপলক্ষে স্থানীয়রা মেয়ে- মেয়ে জামাইকে দাওয়াত করে আনেন। যা এই অঞ্চলের রীতিতে পরিণত হয়েছে।
দর্শনার্থীদের মধ্যে একজন জানান, আমি আমার হাসব্যন্ডের সাথে এসেছি মেলায়। মেলাটা অনেক বড় দেখে অনেক ভালো লাগলো।
এটা হচ্ছে ঐতিহ্যবাহীমেলা অনেক ছোট থেকেই দেখে আসছি বলেও জানান আরেক দর্শনার্থী।
ঈদে যদি কেউ বাড়িতে আসতে পারে নাও পারে কিন্তু এই বলুর মেলায় জামাই এবং মেয়ে শ্বশুর বাড়ি অবশ্যই আসবে। এছাড়াও যত আত্মীয়স্বজন আছে সবাই এইসময় বেড়াতে আসে।
বলুহ মেলায় নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। দামে সাশ্রয়ী হওয়ায় কেনাবেচাও হয় জমজমাট।
মিষ্টি বিক্রেতাদের মধ্যে একজন জানান, 'অনেকদিন ধরেই এখানে আছি মিষ্টির দোকান নিয়ে। বিভিন্ন রকমের মিষ্টির তৈরি করে এখানে বিক্রি করি।'
তবে এই মেলার মূল আকর্ষণ নানান ডিজাইনের ফার্নিচারের দোকান। চাহিদা অনুযায়ী ভাল পণ্য হওয়ায় কিনছেন ক্রেতারা ।
ফার্নিচারের দোকানদার জানান, এখানে কাঠের মান কিছুটা ভালো খারাপ মিলে মেলার মালটা তৈরি হয়। যার কারণে মূলত মেলাতে কম দামে ফার্নিচার পাওয়া যায়।
মেলায় শিশুদের বিনোদনের খোরাক যোগাচ্ছে নাগোরদোলাসহ আধুনিক বিভিন্ন রাইড। রয়েছে অনেক খেলনার দোকান। এসব রাইডে চড়তে পেরে খুশি শিশুরা।
অন্য বছরের তুলনায় মেলায় এবছর দর্শনার্থীদের ভিড় বেশি। ভক্তদের কেন্দ্র করেই এই মেলা। সেজন্য তাদের নিরাপত্তার পুরো গ্রামবাসী সজাগ রয়েছেন বলে জানান আয়োজক কমিটি।
বলু মেলা আয়োজক কমিটি সদস্য সচিব মনিরুজ্জামান মনির বলেন, 'স্থানীয়ভাবে আমরা এই এলাকার লোকজন বসে এটা পরিচলনার জন্য একটা কমিটি তৈরি করে থাকি। আর সেখানে ভলেন্টিয়ার রাখা হয় এবং প্রশাসনও আমাদের সাথে থাকে।'
মেলায় ছোট-বড় প্রায় ২ হাজার স্টল রয়েছে। আর এসব স্টলে প্রতিদিন বিকিকিনি প্রায় অর্ধ কোটি টাকার। সব ধর্মের মানুষই আসে এ মেলায়। ১০ দিনব্যাপী ভক্ত দর্শনার্থীদের মিলন মেলা শেষ হবে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর।