দেশে এখন
0

৭ হাজার টনেরও বেশি চাল সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সদ্য শেষ হওয়া বোরো মৌসুমের জন্য চুক্তি করেও অতিরিক্ত বরাদ্দের সম্পূর্ণ চাল সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। সংগ্রহ অভিযানের মেয়াদ না বাড়ানোয় বরাদ্দের ৭ হাজার টনেররও বেশি চাল সংগ্রহ করা যায়নি। মূলত ছাত্র আন্দোলন ও বন্যার কারণে গুদাম থেকে চাল ডেসপাচ কার্যক্রম বন্ধ থাকায় গুদামে জায়গা না থাকায় চালকল মালিকদের কাছ থেকে চাল নিতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। আর গুদামের জন্য চাল তৈরি করেও দিতে না পেরে লোকসানের আশঙ্কা চালকল মালিকদের।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত ৭ মে থেকে শুরু হয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলা বোরো মৌসুমের জন্য প্রায় ৫৬ হাজার টন সিদ্ধ এবং ৬ হাজার টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে খাদ্য বিভাগ।

এবার মোটা ধানের ফলন ভালো হওয়ার পাশাপাশি চালকল মালিকদের ভালো দাম দেয়ায় নির্ধারিত সময়ের আগেই লক্ষ্যমাত্রার সম্পূর্ণ চাল সংগ্রহ হয়।

পরবর্তীতে চালকল মালিকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত বরাদ্দ দিয়ে আরও প্রায় ১৫ হাজার টন সিদ্ধ এবং ৬ হাজার টন আতপ চাল সংগ্রহের উদ্যোগ নেয় খাদ্য বিভাগ। এর মধ্যে সিদ্ধ চাল সংগ্রহ হয়েছে প্রায় ৯ হাজার টন এবং আতপ সংগ্রহ হয়েছে প্রায় ৫ হাজার টন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মুহাম্মদ আলমগীর কবির বলেন, 'ঘটনা যে ঘটলো সেখানে মানুষের কোনো প্রভাব ছিল না। আর যথাসময়ে চালটা যদি দিয়ে দিতে পারতো তাহলে লোকসান হতো না।আর অতিরিক্ত বরাদ্দের ক্ষেত্রে এটা মাথায় রাখতে হবে সরকার এটা না ও কিনতে পারে।'

চালকল মালিকরা বলছেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর এমনিতেই আশুগঞ্জ মোকামে ধানের সংকটের কারণে দাম ছিল ঊর্ধ্বমুখী। ফলে চুক্তি অনুযায়ী চাল দেয়ার জন্য বাড়তি দামেই ধান কিনে চাল তৈরি করা হয়েছে। এ অবস্থায় খাদ্য বিভাগ চাল না নেয়ার কারণে এসব মোটা চাল খোলাবাজারে বিক্রি করতে গেলে লোকসানে পড়তে হবে।

আশুগঞ্জ উপজেলা অটোরাইস মিল মালিক সমিতি সদস্য মো. হাসান ইমরান বলেন, 'ট্রান্সপোর্ট ছিল না আন্দোলনের জন্য তাই আমরা চাল দিতে পারি নাই । পাশাপাশি এখন যে বন্য হচ্ছে বন্যার জন্য চলমান ডেসপাচ আছে একটা । খাদ্য গুদামে চালটা সংগ্রহ করে তৎক্ষণাৎ চালগুলো ডেসপাচ করা হয় বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন খাদ্য গুদামে। কিন্তু বন্যার জন্য ফেনীতে রাস্তা তলায় গেছে যার জন্য ডেসপাচটা বন্ধ হয়ে গেছে।'

প্রতি মৌসুমেই ধান-চাল সংগ্রহের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়। এবার তা না হওয়ায় এখন আর চাল নেয়ার সুযোগ নেই। তবে অতিরিক্ত বরাদ্দের সব চাল না নিতে পারলেও কোনো সংকট তৈরি হবে না বলে জানান জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক।

গেল বোরো মৌসুমে সরকার কৃষক ও চালকল মালিকদের কাছ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে ধান, ৪৫ টাকায় সিদ্ধ এবং ৪৪ টাকা কেজি দরে আতপ চাল সংগ্রহ করে।