দেশে এখন
0

বন্যার প্রভাবে কুমিল্লায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত শিক্ষা কার্যক্রম

বন্যার কারণে কুমিল্লায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। একদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্যদিকে বানের জলে অসংখ্য শিক্ষার্থীর বই-খাতাসহ ভেসে গেছে শিক্ষা উপকরণ। স্কুল খুললেও খোদ শিক্ষকরাই ভাঙা সড়কে স্কুলে আসতে হিমশিম খাচ্ছেন। তাছাড়া আশ্রয়কেন্দ্র এখনও চালু থাকায় এখনই শুরু করা যাচ্ছে না পাঠদান কার্যক্রম।

কুমিল্লায় বন্যার পানি নামছে আর ভেসে উঠছে ধ্বংসস্তূপ। কোথাও ধসে পড়া ঘর, কোথাও আবার বানের জলে ভেসে গেছে মাথাগোজার ঠাঁই। কৃষি মৎস্য আর প্রাণিসম্পদের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষতিও ব্যাপক। বানের জলে ভেসে গেছে অনেক শিক্ষার্থীর শিক্ষা উপকরণ। স্কুলে আসার সড়কও নষ্ট হয়ে গেছে। তাই কবে নাগাদ এসব শিক্ষার্থী বই নিয়ে পড়ার টেবিলে বসবে তার উত্তর নেই কারও কাছে।

কুমিল্লায় ৯৩ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে বেছে নেয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বহুতল ভবন। পানি নামলেও ঘরে উঠার পরিবেশ না থাকায় অনেকেই রয়ে গেছেন স্কুলগুলোতে। কারণ অনেকেরই ঘর বাড়ি বন্যায় পুরোপুরি ভেঙ্গে গেছে বলে জানান আশ্রয়কেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্তরা। পুনর্বাসনের সহযোগিতা না পেলে আগামীদিন নিয়ে উৎকণ্ঠিত ক্ষতিগ্রস্তরা।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও এখনও বেশিরভাগ আশ্রয়কেন্দ্র থেকে মানুষ বাড়ি ফিরতে পারেনি। তাই শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না। এদিকে সড়কের বেহাল দশায় কিভাবে পাঠ কার্যক্রমে যুক্ত হবে শিক্ষার্থীরা তা নিয়ে উদ্বিগ্ন শিক্ষকরা। পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা বানভাসীরা।

আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা বানভাসীরা ডায়রিয়া, চুলকানি, এলার্জি এই জাতীয় রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। বানভাসী এসব মানুষদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হলেও প্রয়োজন উন্নত চিকিৎসার জানালেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।

চলমান বন্যায় জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬৩৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখনই শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না ১০৪টি প্রাথমিক ও ৩৪০টি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। শিক্ষাসামগ্রী হারানো শিক্ষার্থীদের মাঝে আবারও বই বিতরণ করা হবে বলছেন শিক্ষা কর্মকর্তা।

কুমিল্লার জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, '৪৭৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। মোট ৩২৮টি প্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্র আছে বর্তমানে। এই আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থা যদি করা যায় তাহলে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা যাবে'।

বন্যায় অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতিও ব্যাপক। এলজিইডির ১০০০ কিলোমিটার ও সওজের ১০০কিলোমিটার সড়ক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও আরও কয়েকশ' কিলোমিটার গ্রামীণ সড়কসহ ২৬টি ব্রিজকালভার্ট বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক না হলে পাঠদান কার্যক্রমেও তার নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।