কৃষি
দেশে এখন
0

পঞ্চগড়ে পান চাষে সফল চাষিরা, দুদিনের হাটে বিক্রি ১৫ লাখ টাকা

এক সময় নানা শস্য আবাদ করে লোকসানের বোঝা টানলেও এখন পান চাষ করে ভাগ্য ফিরেছে পঞ্চগড়ের ৫ থেকে ৭'শ চাষির। পান চাষিদের পাশাপাশি বদলে গেছে এলাকার আর্থ সামাজিক চিত্রও। সপ্তাহে দুদিনের হাটে বিক্রি হয় ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার পান। যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

এসময় যে জমিতে নানা ফসল চাষ করে দিনের পর দিন গুনতে হয়েছে লোকসান সেই জমিতেই পান চাষ করে আয় করা সম্ভব হচ্ছে লাখ টাকা। আর এতে পঞ্চগড়ে বাড়ছে পান চাষ । পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকা পাহাড়বাড়ি ও নালাগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে চাষাবাদ হচ্ছে পানের। ৫ থেকে ৭'শ কৃষক নিজেদের ভাগ্য বদলের হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছেন এই অর্থকরি ফসল।

পানচাষিদের মধ্যে একজন বলেন, 'আগে এখানে পানচাষি ছিলোই না। কিন্তু একজনের দেখাদেখি আরেকজন লাভবান হয় বলে এখন ৮০ ভাগ লোকেরই পানের বাগান আছে।'

চাষিরা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে পানের বরজ করতে খরচ হয় সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা। আর বছরে প্রতি বিঘা জমি থেকে পান বিক্রি করে মুনাফা আসে ন্যুনতম ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা। ভরা মৌসুমে প্রতি সপ্তাহে বিঘায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পান বিক্রি করা যায়। তবে পান চাষে নিবিড় পরিচর্যা ও দারুন পরিশ্রম করতে হয় চাষিদের। আর একবার বরজ করলে সেখান থেকে ২০ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত পান সংগ্রহ করা যায়।

হাটে একবিঘা জমি থেকে আমরা ২০-৩০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারে। মাসে কারো ৫০-৬০ হাজারের মতো ইনকাম হয় বলেও জানান আরেক চাষি।

পান চাষ করে নিজেদের ভাগ্য বদলের পাশাপাশি এলাকার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করেছেন চাষিরা।পরিবারগুলোতে এসেছে স্বচ্ছলতা।

সপ্তহের মঙ্গল ও শুক্রবার হাড়িভাসায় হাট বসে পানের। তাই আগে থেকেই পান তুলে গণণা করে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেন চাষিরা। ৬৪ টি পানে এক বিড়া হয়। প্রতি বিড়া পান আকার অনুযায়ী ৩০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে। দূরের ব্যবসায়ীরা এসে পান কিনে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, শঠিবাড়ি ও ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করেন। ঝাঝালো সাদের এই পানের চাহিদা রয়েছে বেশ।

ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজন বলেন, 'সকাল ৮টার মধ্যেই পানের বাজার শেষ হয়ে যায়। তবে জায়গার সংকুলানের কারণে আমাদের কৃষকদের সমস্যা হয়।'

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলায় পানের গড় ফলন হেক্টরে ৩ মেট্রিক টন।

পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অতিরিক্ত উপপরিচালক বাসুদেব রায় বলেন, 'গতবার জেলায় মোট ১৪ হেক্টর জমিতে পান চাষ করা হয়। যার মধ্যে সুপারিগাছে পাান আবাদ করা হয় ৩ হেক্টর জমিতে। এবং বরজ হিসেবে ১১ হেক্টর জমিতে। অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় পান আবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।'

পান চাষে যেমন লাভ তেমনি চাষাবাদে প্রয়োজন বড় অঙ্কের টাকা। সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা পেলে সীমান্ত এলাকার এই পান চাষ পাবে নতুনমাত্রা।

এফএস