শিক্ষা
দেশে এখন
4

পুরনো শিক্ষাক্রমে ছাপা হবে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের নবম-দশম শ্রেণির পাঠ্যবই

অন্য সব শ্রেণির নতুন কারিকুলামের বইয়ে পরিমার্জন

আসছে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে পুরনো শিক্ষাক্রমের আলোকেই ছাপা হবে নবম-দশম শ্রেণির পাঠ্যবই। তবে নানা অসঙ্গতির সংস্কার ও পরিমার্জন করে নতুন শিক্ষাক্রমেই থাকছে অন্য সব শ্রেণির বই। পরিবর্তন আসবে মূল্যায়ন পদ্ধতিতে।

একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য। এদিকে ৬টি শ্রেণির বইয়ের টেন্ডার হয়ে গেলেও বই পরিমার্জনের কাজ চলায়, শুরু করা যাচ্ছে না মুদ্রণ। এই কাজে বেশি দেরি করলে জানুয়ারির আগে সব বই মাঠ পর্যায়ে পৌঁছানো নিয়ে শঙ্কার কথা বলছেন মুদ্রণ ব্যবসায়ীরা। তবে এনসিটিবি বলছে শিগগিরই জারি করা হবে পরিপত্র।

ছাত্রজনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে প্রশাসনিক সংস্কারের আকাঙ্খায় যখন চলছে নানা রদবদল, তখন সংস্কারের ঢেউ লেগেছে শিক্ষাতেও।

২০২৩ সাল থেকে বাস্তবায়ন শুরু হওয়া নতুন শিক্ষাক্রমের মূল্যায়ন পদ্ধতিসহ নানান অসঙ্গতি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা তুঙ্গে শুরু থেকেই। একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা গেছে, নতুন শিক্ষাক্রমের পাঠ্যবইয়ের ছবি ও বিষয়বস্তুসহ যেসব সমস্যা আছে তা পরিমার্জন শেষে পাণ্ডুলিপি শিগগিরই মুদ্রণে পাঠানো হবে। তবে, এর আওতায় থাকবে না নবম-দশম শ্রেণি।

পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নবম-দশম শ্রেণির জন্য পুরনো শিক্ষাক্রমেই পাঠ্যবই ছাপানো হবে। থাকবে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগও।

চলতি শিক্ষাবর্ষে যারা নবম শ্রেণিতে বিভাগহীন নতুন শিক্ষাক্রমের বই পড়ছে, আগামী বছর দশম শ্রেণিতে তাদের পুরনো শিক্ষাক্রমের বই দেয়া হবে। ২০২৬ সালে তাদের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেয়া হবে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে।

চলতি শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ৩ কোটি ৮১ লাখের বেশি শিক্ষার্থীর মাঝে প্রায় পৌনে ৩১ কোটি বিনামূল্যের পাঠ্যবই বিতরণ করে সরকার। যেখানে খরচ প্রায় ১২’শ কোটি টাকা। আর ২০২৫ সালের জন্য প্রায় ৩৫ কোটি পাঠ্যবই বিতরণের লক্ষ্য, যেখানে ১৪’শ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করতে হবে সরকারকে।

ইতোমধ্যে ৬টি শ্রেণির বইয়ের জন্য ৩টি টেন্ডার হয়েছে। কিন্তু টেন্ডার হলেও বইয়ের সংস্কারের কাজ চলমান থাকায় এখনও চূড়ান্ত পান্ডুলিপি হাতে পাননি মুদ্রণ ব্যবসায়ীরা। সব বই জানুয়ারির আগেই মাঠ পর্যায়ে পৌঁছানো নিয়ে তাই শঙ্কা তাদের।

বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক চেয়ারম্যান তোফায়েল খান বলেন,  'এনসিটিভির যথাসময়ে বই দেয়ার একটা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এইটা মোকাবিলার জন্য আমরা সহযোগিতা করতে চাই। তবে এটার জন্য ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে।'

আগামী বছর ঠিক সময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে যেন পাঠ্যবই পৌঁছায় সেজন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ এই শিক্ষাবিদের।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআরের অধ্যাপক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেন, 'সকল ধরনের স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে অতি দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বাস্তবায়ন করা।'

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বলছে, পরিমার্জনের কাজ চলছে। শিগগিরই পরিপত্র জারি হবে। নির্দিষ্ট সময়ে বই দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে তারা।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী বলেন, 'ক্রাইসিস সময়ে বই মুদ্রণে অতি দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয়। একটা জিনিস নিশ্চিত করতে চাই জানুয়ারি ১ তারিখে শিক্ষার্থীরা বই পাবে। তাদের শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বাধা হবে না।'

নতুন শিক্ষাক্রমের জন্য যে মূল্যায়ন পদ্ধতি প্রণয়ন করা হয়েছে তা শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ অনেকের কাছেই স্পষ্ট ও গ্রহণযোগ্য নয়; তাই সে মূল্যায়ন পদ্ধতিকে বাতিল করে একটি স্পষ্ট ও গ্রহণযোগ্য পদ্ধতির জন্য কাজ করছে সরকার।

tech

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর