২০২২ সালের জুনে ভারতের ত্রিপুরা থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয় আখাউড়ার দু'টি ইউনিয়ন। ভেঙে যায় হাওড়া নদীর আড়িয়ল অংশের বাঁধ। দুই বছরের ব্যবধানে আবারও ভয়বাবহ বন্যার কবলে সীমান্তবর্তী আখাউড়া উপজেলা।
গেলো ২১ আগস্ট ঢলের জল ও ভারি বর্ষণে ৪০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়। এবারও পানির তোড়ে ভেঙে যায় হাওড়া নদীর আড়িয়ল ও খলাপাড়া অংশের দু'টি বাঁধ।
সেই সঙ্গে পানিতে ভেসে যায় নদীপাড়ের বেশ কয়েকটি বসত ঘর। তবে পানি কমতে থাকায় বন্যা পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। যদিও এখনও পানিবন্দি নিচু এলাকার বেশ কিছু ঘরবাড়ি।
মূলত বন্যার পানি আটকে থাকার কারণ হিসেবে কয়েকটি খাল ও নদী দখল-দূষণের কথা বলছেন স্থানীয়রা। প্রভাবশালীদের দখলে বহু আগেই জৌলুস হারিয়েছে ভারতের ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে আখাউড়া প্রবেশ করা সাইনধারা নদী। অনেক অংশেই দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে স্থাপনা। এতে সরু হয়ে নদী হারিয়েছে স্বাভাবিক গতি।
এছাড়া স্থলবন্দর থেকে আখাউড়া উপজেলা সদর হয়ে তিতাস নদীতে গিয়ে মিলিত হওয়া কালন্দি খালেরও একই দুর্দশা। পাড় ঘেঁষে অবৈধ স্থাপনা আর ময়লা-আবর্জনা ফেলে পানি প্রবাহে তৈরি হয়েছে বাধা। একই দুর্দশা সীমান্ত চিরে আসা জাজি খালের।
পরিবেশকর্মীরা বলছেন, দখল-দূষণের কারণে কোনো খালেরই পানিপ্রবাহ ঠিক নেই। প্রভাবশালীদের দখলে বিলীন হয়েছে খাল ও নদীর অনেক অংশ। তাই পানি সরে যাওয়ার পথ রুদ্ধ হওয়ায় বন্যার কবলে পড়ে বার বার বিপর্যয়ের মুখে পড়ছেন সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দারা।
আখাউড়া প্রকৃতি ও পরিবেশ ক্লাবের আহ্বায়ক রুবেল আহমেদ বলেন, ‘এখনই সময় এসেছে আখাউড়ার দখলকৃত ও দূষিত খাল উদ্ধার করা। তা না হলে সামনের দিনগুলোতে আখাউড়া আরো ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়তে পারে।’
তবে শিগগিরই দখল হওয়া খাল পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি পানি প্রবাহ ঠিক রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজালা পারভীন রুহি বলেন, আমরা এগুলো নিয়ে বসবো। কোথায় খাল রয়েছে, সেগুলো কতটুকু ভরাট হয়েছে, সে বিষয়ে জরিপ না করে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা অবশ্যই চাইবো প্রাকৃতিক পানি প্রবাহ যেভাবে হয় সেভাবে যেন ব্যবস্থা করা যায়।
বন্যার পানির তোড়ে আখাউড়া-আগরতলা সড়কের জাজি খালের ওপর বেইলি সেতু ভেঙে যাওয়ায় চলছে না যানবাহন। এতে বন্ধ রয়েছে আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম।