এই বাকবিতন্ডা মাংসের দোকানি ও মার্কেটের কর্মচারীর। পানি ও নিরপত্তা রক্ষীর ফি বাবদ অতিরিক্ত টাকা দাবি করায় চটেছেন মাংস ব্যবসায়ীরা। বছরের পর বছর ফি'র নামে এভাবেই আদায় করা হচ্ছে চাঁদা।
মাংস ব্যবসায়ীদের একজন বলেন, ‘পানি ও নিরপত্তা রক্ষীর ফি বাবদ ১ হাজার টাকা দিতে হতো, না দিলে লোকমান মিয়ার বাহিনী আমাদের উপর নানাভাবে হুমকি দিতো।’
আরেকজন বলেন, ‘চাঁদা আদায় না হলে আমরা মাংসের দাম কমিয়ে ফেলতে পারবো।’
দোকানীর উত্তেজনায় সটকে পড়ার চেষ্টা করেন চাঁদা আদায়কারী। অপরাধ স্বীকার করে বললেন, ভাড়ায় খাটছেন তিনি।
চাঁদা আদায়কারী বলেন, ‘আমি চাকরি করি। আমার কাজ হচ্ছে টাকা আদায় করা।’
কারওয়ান বাজারের মুরগী পট্টি ঘুরেও মিলেছে একই অভিযোগ। দোকানদারা বলছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চাঁদার হার আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। তবে পরিবর্তন হয়েছে চাঁদা আদায়কারীর।
দোকানদারদের একজন বলেন, ‘আগে তো চাঁদা পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে অনেকেই নিতো।’
এদিকে সবজিসহ পাইকারি আড়তের দোকানীদের কাছ থেকেও চাঁদা আদায় অব্যাহত রয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন কালে কিছু দিন চাঁদা দিতে না হলেও এখন আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে চাঁদবাজ চক্র। চাঁদা দেয়া না হলে দেয়া হচ্ছে হুমকি। এ নিয়ে অভিযোগেরও শেষ নেই কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীদের।
দোকানদারদের আরেকজন বলেন, ‘সরকার পরিবর্তন হয়েছে ভাবছি চাঁদা দিতে হবে না। ছাত্ররা যে কয়দিন মাঠে ছিল ততদিন চাঁদা দিতে হয়নি।’
ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্য বলছে, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের হয়ে তিন শ্রমিক লীগ নেতা নিয়ন্ত্রণ করতেন পুরো কারওয়ান বাজার। যার মূলে রয়েছেন শ্রমিকলীগ নেতা মোশাররফ মিয়া। অন্যদিকে মুরগী ও মাংসের পট্টি নিয়ন্ত্রণে ছিলো লোকমানের হাতে। পাইকারি আড়তসহ সবজি বাজার নিয়ন্ত্রণ করে কাশেম ওরফে হাতকাটা কাশেম। তারা গা ডাকা দিলেও সক্রিয় তাদের অনুসারী ও লাইনম্যানরা।
দোকান ছাড়াও পণ্য সরবরাহকারী ট্রাক থেকেও চাঁদা আদায় নিয়মে পরিণত করেছে চক্রটি। যার প্রভাব পড়ে খুচরা বাজারে। ব্যবসার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে বাজার তদারকি ও কঠোরভাবে আইন প্রয়োগের দাবি ব্যবসায়ীদের।