ভারতের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন ঘিরে বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) ভোর থেকেই রাজধানী নয়াদিল্লির লালকেল্লায় জড়ো হন হাজার হাজার মানুষ। স্থানীয় সময় সকাল ৭টার কিছু পরে সেখানে হাজির হন টানা তৃতীয়বারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ঠিক সাড়ে ৭টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা। গাওয়া হয় জাতীয় সংগীত।
এর পর স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন মোদি। পরে, দেশবাসীর উদ্দেশে স্বাধীনতা দিবসের টানা ১১তম ভাষণ দেন নরেন্দ্র মোদি। শুরুতেই শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন প্রধানমন্ত্রীর। প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণ হারানো নাগরিকদের জন্যও শোক জানান তিনি। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের হাসপাতালে নারী চিকিৎসক হত্যাকাণ্ড ঘিরে চলমান অস্থিরতার প্রসঙ্গ তুলে নারী সুরক্ষা নিশ্চিতের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, 'নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনার দ্রুত তদন্ত করতে হবে৷ যারা এই পাশবিক কাজ করেছে, তাদের যত দ্রুত সম্ভব কড়া শাস্তি দিতে হবে৷ সমাজের মধ্যে বিশ্বাস ফিরিয়ে আনা খুব জরুরি।'
ভাষণের এক পর্যায়ে উঠে আসে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ। ভারত সবসময়ই বাংলাদেশের অগ্রগতির শুভাকাঙ্ক্ষী উল্লেখ করে তিনি জানান, তারা দেশ চায় প্রতিবেশি দেশগুলো সমৃদ্ধি ও শান্তির পথে হাঁটুক।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, 'আমরা শান্তি প্রচারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটি আমাদের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের মধ্যে রয়েছে। আগামী দিনে আমরা মানবজাতির কল্যাণের কথা চিন্তা করে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় মঙ্গল কামনা করে এগিয়ে যাবো।'
ভাষণে দেশে ধর্মনিরপেক্ষতার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন মোদি। জানান, ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ায় বা হয়রানি হয় এমন ১ হাজার ৫০০টিরও বেশি আইন এরইমধ্যে বাতিল করেছে তার সরকার। একইসঙ্গে, দেশে দুর্নীতিবাজদের জন্য আতঙ্কের পরিবেশও সৃষ্টি করতে চান বলেও জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, 'যেসব আইন ধর্মের নামে দেশকে বিভক্ত করে, সেসব আইন তুলে দেয়া উচিত। তাই দেশে একটি ধর্মনিরপেক্ষ সিভিল কোডের প্রয়োজন। সেইসঙ্গে আধুনিক সমাজে ভুল আইনের কোন স্থান নেই।'
এছাড়া মানুষের জীবনযাত্রা আরও সহজ করতে একাধিক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলেও জানান ভারতের সরকারপ্রধান। তিনি জানান, নতুন শিক্ষানীতিতে মাতৃভাষার উপর জোর দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে, আগামী ৫ বছরে মেডিকেল কলেজে ৭৫ হাজার নতুন আসন তৈরির প্রতিশ্রুতিও দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।