তিস্তা মহাপরিকল্পনায় শুরু থেকেই আগ্রহ ছিল চীনের। পরিকল্পনা ও সমীক্ষা করেছিল দেশটি। বিগত শেখ হাসিনা সরকারও এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা চেয়েছিল চীনের কাছে।
কিন্তু হঠাৎ করেই বদলে যায় পাশার দান। চলতি বছর ভারত সফর থেকে ফিরে এসে একাধিকবার শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীদের বলতে শোনা যায় তিস্তা মহাপরিকল্পনা যাচ্ছে ভারতের কাছে।
তবে সমালোচনা রয়েছে সীমান্তহত্যার বিরুদ্ধে জোরালো কোনো পদক্ষেপ ছিল না বিগত সময়ে। এছাড়াও দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন ইস্যুতেও ভারসাম্য রাখা হয়নি। যা ইঙ্গিত দেয়, দিল্লি-ঢাকা সম্পর্ক শুধু রাজনৈতিক। জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে এর কোনো প্রভাব নেই।
সদ্য গঠিত হওয়া অন্তবর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনও বললেন একই কথা। প্রথম কর্মদিবস শেষে গণমাধ্যমে মতবিনিময়ে তিনি জানান, ভারতের সাথে সদ্য পতন হওয়া সরকারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তবে, দেশের মানুষের কতটা ঘনিষ্ঠ ছিল তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মানুষের সাথে সম্পর্ক নিয়ে কাজ করবে সবার সাথে। সমান সম্পর্ক নিয়ে এগিয়ে যাবে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'আমি মনে করি আসলে দুই সরকারের মধ্যে খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। আমরা সবাই জানি যে, সেটা অনেকেই বলেছে। মানুষের মাঝে কতটুকু সোনালি অধ্যায় চলছিল সম্পর্কের ব্যাপারে, তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। আমি চেষ্টা করবো যে সম্পর্ক শুধু দু'টি দেশের মধ্যে না, দুই দেশের সার্বিক অস্তিত্বের মধ্যে মানুষ খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেই মানুষ যেন ভাবে যে ভারত আমাদের খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আমরাও এটাই চাই।'
ছাত্র আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ করায় আরব আমিরাত প্রশাসনের হাতে আটক ৫৭ কর্মীকে মুক্ত করতে প্রধান উপদেষ্টা সর্বোচ্চ পর্যায়ে কথা বলবেন বলে জানান তিনি। আরও বলেন, তাদের আন্দোলন সে দেশের আইন ভঙ্গ করেছে কিন্তু তাদের আবেগ ছিল ছাত্রদের পক্ষেই।
মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, 'কিছু কিছু মিশনে কিন্তু এই মিছিল হয়েছে এই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে। তারমধ্যে দুঃখজনকভাবে একটি দেশে আমাদের বেশকিছু কর্মীকে আটকের পর বিচার করে জেলও দেয়া হয়েছে। এ বিষয়টা আমরা গভীরভাবে দেখছি যেন তাদের কিছুতেই কষ্ট না হয়। সেজন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করছি আজ বা কালের মধ্যেই প্রধান উপদেষ্টা নিজে কথা বলবেন তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে। অন্ততপক্ষে তাদের যেন কোনো শাস্তি ছাড়া মুক্তি দেয়া হয়।'
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা যাদের ইন্ধনে হয়েছে তাদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা হবে। প্রয়োজনে জাতিসংঘও যুক্ত করা হতে পারে।