দেশে এখন
0

বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত সিরাজগঞ্জের তাঁত শিল্প

সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জে বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও সময়ের সাথে বাড়ছে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ। বানের পানিতে নষ্ট হয়েছে বিস্তীর্ণ জমির ফসল ও বসতবাড়ি। দীর্ঘস্থায়ী এই বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে তাঁত শিল্পের। পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে শতাধিক তাঁত কারখানার যন্ত্র ও সরঞ্জাম, কর্মহীন হয়ে পড়েছে শ্রমিকরা।

এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বিপৎসীমার উপরে বইছে যমুনা নদীর পানি। এরই মধ্যে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে পানি কমতে শুরু করলেও পানিবন্দি নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা। পানিতে ডুবে রয়েছে বসতবাড়ি ও বিশুদ্ধ পানির নলকূপ, দেখা দিয়েছে খাবার পানির সংকট। নেই পর্যাপ্ত শুকনো খাবারও।

বানভাসি মানুষদের একজন বলেন, 'মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। খাবারের প্রচুর কষ্টে আছি।'

চলতি বন্যায় সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত তাঁত শিল্প এলাকা সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের মোহনপুর, চর মোহনপুর ও পূর্ব বাঐতারা'র তিনশত পরিবার। যমুনার পানি বাড়ায় তলিয়ে গেছে এই এলাকার ১২শ’ তাঁতযন্ত্র। বন্ধ হয়ে গেছে তাঁত কারখানাও।

একই চিত্র বেলকুচি, এনায়েতপুর ও শাহজাদপুরের ছোট-বড় প্রায় শতাধিক তাঁত কারখানার। পানির নিচে তলিয়ে গেছে প্রায় আট হাজার তাঁতযন্ত্র। বানের পানিতে ডুবে নষ্ট হচ্ছে তাঁতের সরঞ্জাম, এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে তাঁত মালিকরা। আর কারখানা বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে এই শিল্পের সাথে জড়িত অন্তত ২৫ হাজার কর্মজীবী মানুষ।

তাঁত মালিকদের একজন বলেন, 'যে শ্রমিক কাজ করে তারা চলে গিয়েছে। এদের এখন কখন পাবো আর পানি কমলেও কি আমরা অগ্রসর হতে পারবো কিনা জানি না।'

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত তাঁতিদের তালিকার মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ নেয়ার কথা জানান জেলা তাঁত বোর্ডের কর্মকর্তা।

তাঁত বোর্ড সিরাজগঞ্জে ভারপ্রাপ্ত লিয়াজোঁ অফিসার মো. ইমরানুল হক বলেন, 'আমরা জরিপ করতেছি এরপর প্রধান কার্যালয়ে পাঠিয়ে সহায়তা প্রধানের ব্যবস্থা করা হবে।'

আর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের জন্য ১ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ২৫ লাখ টাকা ও ৭০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাসও দেন জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য।

সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মীর মাহবুবুর রহমান বলেন, 'উপজেলা পর্যায়ে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ও বিতরণ কার্যক্রম চলছে।' 

সিরাজগঞ্জ সদর ও কামারখন্দ আসনের সংসদ সদস্য ড. জান্নাত আরা হেনরী বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে বিভিন্ন সহযোগিতা এসেছে সেগুলো নিয়ে আমরা মানুষের পাশে আছি।'

দীর্ঘস্থায়ী এই বন্যায় জেলার ৫ উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর ফসলি জমির ৬০ কোটি টাকার ফসল। বন্ধ রয়েছে শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর