ব্রিটিশ শাসন আমলের শুরুর দিকে মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর তীরে গড়ে উঠে পুরানবাজার বাণিজ্য কেন্দ্র। তখন রেলপথ প্রতিষ্ঠার পর এই অঞ্চলের বাণিজ্যিক কার্যক্রম আরও বিস্তৃতি লাভ করে। যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠে রেলপথ। এক সময় এই অঞ্চলে ৮ জোড়া ট্রেন চলাচল করলেও বর্তমানে চলাচল করে মাত্র দুটি ট্রেন।
চাঁদপুর স্টেশন যেটি মেঘনা ও
চাঁদপুর রেলওয়ের পয়েন্টস ম্যান ইয়ার সাহাবুদ্দিন বলেন, 'এখানে ১২ জনের দরকার সেখানে আমরা ৩ জন কাজ করছি। যেই কাজে যাকে নেয়ার দরকার তাকে না নিয়ে অন্যকে নেয়া হচ্ছে।'
চাঁদপুর রেলওয়ের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার সোয়াইবুল সিকদার বলেন, 'স্বল্প জনবল নিয়ে যাত্রী সেবা দিতে কষ্টকর হয়ে পড়ছে।'
এক সময় চাঁদপুর থেকে লাকসাম, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলাচল করতো ট্রেন। যাত্রী চলাচলের পাশাপাশি পরিবহন করা হতো ইলিশ মাছসহ নানা পণ্য। এতে সরকারের কোষাগারে জমা হলো রাজস্ব, পাশাপাশি চাঙ্গা ছিল এই অঞ্চলের অর্থনীতি।
তবে ২০০৫ সালে বন্ধ হয়ে যায় অধিকাংশ ট্রেন। ২০১৩ সালে কমিউটার ডেমো ট্রেন চালু করা হলেও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে ২০২১ সালে তা চূড়ান্তভাবে বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে আন্তঃনগর মেঘনা এক্সপ্রেস ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় লোকাল সাগরিকা নামে দুটি ট্রেন চলাচল করছে। ট্রেন সংখ্যা কমে যাওয়ায় চলাচলে বিপাকে পড়ছে যাত্রীরা।
ট্রেন যাত্রীদের একজন বলেন, 'আমরা যেতে চাইলেই বলে ট্রেনে সিট নেই, দাঁড়িয়ে যেতে হবে।'
আরেকজন বলেন, 'যে গাড়ি ১২টা ৩০ মিনিটের সেই গাড়ি আসে ২টা - ৩টায়।'
চাঁদপুর-লাকসাম সেকশনে ৫২ কিলোমিটার রেলপথে স্টেশন রয়েছে মোট ১১টি। এরমধ্যে ৬টি স্টেশনে কার্যক্রম থাকলেও জনবলের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে মৈশাদী, শাহতলী, বলাখাল ওয়ারুক ও শাহরাস্তি স্টেশন। অথচ ২০১৬ সালে মৈশাদী, শাহতলী, মধুরোড ও বলাখাল স্টেশনে নির্মাণ করা হয় নতুন ভবন। লোকবল সংকটে অব্যবহৃত রয়েছে এসব স্টেশন।
চাঁদপুর রেলপথের সংকট নিরসনে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস কুমিল্লা রেলওয়ের এই কর্মকর্তা।
কুমিল্লা রেলওয়ের উর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী লিয়াকত আলী মজুমদার বলেন, 'জনবল সংকট গেলে এবং আমাদের নতুন কোচ ও ইন্জিন আসলে এই সমস্যা কেটে যাবে।'
২০১২-১৩ অর্থ বছরে লুপলাইনসহ চাঁদপুর-লাকসাম রুটের ৫৭ কিলোমিটার রেলপথ পুনঃস্থাপন, ১১টি স্টেশন ভবন ও ছোট বড় ৫৭টি ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণে ব্যয় হয় ১০৬ কোটি টাকা।