কাতারে ব্যবসা-বাণিজ্যে দিন দিন ভালো করছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। একসময় অধিকাংশ ব্যবসা ভারতীয়সহ ভিনদেশিদের দখলে থাকলেও ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসছে সেখানে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাব বাড়ছে প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের। প্রবাসীদের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ায় কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশিদের জন্য।
কাতারের বাণিজ্যিক এলাকা লজেস্টিক ভিলেজে প্রবাসী বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা সাফল্য দেখাচ্ছেন। বিদেশি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গড়ে তুলেছেন পাইকারি ব্যবসার আড়ত। বাংলাদেশিদের আড়তের পেঁয়াজ, রসুন, আলু, সবজি, ফলমূলসহ বিভিন্ন মালামাল যাচ্ছে কাতারের বড় বড় কাঁচামালের বাজারসহ শপিংমলগুলোতে।
একজন প্রবাসী ব্যবসায়ী বলেন, 'আগে আমরা অন্যদের দেখতাম, এখন আমরা নিজেরাই ব্যবসা করি। আমরা এর মাধ্যমে অনেক ভালো করছি। আমরা বাংলাদেশ থেকেই বেশিরভাগ পণ্য নিয়ে আসি। বাংলাদেশি প্রবাসীদেরও কাজ দেয়ার বিষয় মাথায় রাখি। তারা কেউ আসলে ফিরিয়ে দেই না।'
পণ্য পরিবহনজনিত সমস্যায় বাংলাদেশ থেকে আনা সবজিসহ অন্যান্য কাঁচামাল নষ্ট হয়ে যায় বলে জানালেন প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। পণ্য আমদানির জন্য বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে সরাসরি জাহাজ চালুর দাবি জানান তারা।
কাতারে প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী বাবু শিবু দত্ত বলেন, 'বাংলাদেশ থেকে পণ্য নিয়ে আসতে হলে খুব ভালোভাবে প্যাকিং করতে হয়। একটু এলোমেলো হলে পণ্য নষ্ট হয়ে যায়। বেশিরভাগ সময় পণ্য নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আমরা বেশি লাভবান হতে পারি না। জাহাজের মাধ্যমে পণ্য আনতে হলে সিঙ্গাপুরের পথ হয়ে আসতে হয়। সে সময় ২৫ থেকে ৩০ দিন সময় লাগে। সেজন্য বাংলাদেশ থেকে সরাসরি জাহাজ চালু হলে আমাদের জন্য অনেক ভালো হবে।'
কাতারে সফল ব্যবসায়ীরা রেমিট্যান্স প্রেরণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। লজেস্টিক ভিলেজ পরিদর্শনে গিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা কমিউনিটি ও দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন।
কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম বলেন, 'ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ফল ও সবজি নিয়ে আসেন। আশা করি তারা এই সতত ও পরিশ্রম বজায় রাখবেন। এরকম প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশি প্রবাসীদের মুখ উজ্জ্বল করছেন।'
কাতারে বাংলাদেশিদের মালিকানাধীন ৩০ হাজারের বেশি ছোট বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এইসব প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন এক লাখেরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি। সবমিলিয়ে বর্তমানে প্রায় চার লাখের মতো প্রবাসী বাংলাদেশি কাতারে বিভিন্ন পেশায় কর্মরত রয়েছেন।