কতো নিবিড়ভাবে ফুটে আছে কৃষ্ণ, বৃক্ষের চূড়ায় উঠে। ঝরে পড়েছে কতো ফুল আর কতো পাপড়ি। বৈশাখ পেরিয়ে জৈষ্ঠ্যে কৃষ্ণচূড়া এখনও অপেক্ষায়। কেউ একজন আসবেন। মুগ্ধতা ছড়াবে তার চোখে। যদি না ছড়ায় মুগ্ধতার আলো, তবে মন ভেঙে যাবে গুলমোহরের। যাকে চিনি কৃষ্ণচূড়া বলে।
গ্রীষ্মের দাবদাহে শীতল খন্ড হয়ে নেমে আসে প্রশান্তির এই আগুন রঙ। ডালে ডালে চোখ ধাঁধানো কৃষ্ণচূড়া তার সৌন্দর্যে বিমোহিত করে কাছে টেনে নেয় নগরবাসীকে।
প্রখর রোদে পোড়া পিঠ আর আগুনের কুণ্ডে শেকা হাতের মাঝে কৃষ্ণচূড়ার আগমন প্রাণ দিয়েছে এই প্রকৃতিতে। ঠিক যেভাবে কবি নজরুল লিখেছিলেন, ‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে, আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে’
প্রকৃতির এই শুষ্ক মৌসুমে কৃষ্ণচূড়া আসে মানব মনকে শীতল পরশ বোলাতে আর ক্লান্তি দূর করে নব উদ্যমে জাগিয়ে তুলতে। রক্তিম কৃষ্ণচূড়ার রঙের সঙ্গে প্রেমের এই যে সমন্বয় তার সমার্থক আর কী বা হতে পারে?
একজন বলেন, ‘কৃষ্ণচূড়ার রঙ আমার ভীষণ পছন্দের। এই রঙের সঙ্গে যেন মনের টান আছে। এমনিতেই আমি লাল রঙ পছন্দ করি। এজন্য আজ লাল ড্রেস পরে আসছি।’
আরেকজন বলেন, 'আজ যখন হেঁটে আসছিলাম, তখন এতো ভালো লাগছিল। রোদের মাঝে যেন কৃষ্ণচূড়া আরও রঙিন হয়ে ওঠে।’
রাজধানী শহর ঢেকে আছে লাল সামিয়ানায়। রাজধানীর জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা থেকে শুরু করে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও হাতিরঝিলে সারি সারি কৃষ্ণচূড়া নগরীর গ্রীষ্মকে আরও নান্দনিক ও লাবণ্যময় করে তুলেছে। গাছে গাছে যেন আগুন রাঙা কৃষ্ণচূড়ার সাজানো দীপ্তি।
এক তরুণী বলেন, ‘কৃষ্ণচূড়া দেখলেই মন থেকে প্রশান্তি চলে আসে। যে কারণে বারবার এই কৃষ্ণচূড়ার কাছে ছুটে আসি।’
পূর্ব আফ্রিকার মাদাগাস্কার থেকে কার বাহন হয়ে এসেছিল, পাখির ঠোঁটে নাকি বণিকের মুঠোবন্দি হয়ে? যেভাবেই আসা হোক, এই অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে প্রেম ও দ্রোহের সর্ম্পকে জট বাঁধে কৃষ্ণচূঁড়া।