দেশে এখন

ডোনাল্ড লু-সালমান এফ রহমান বৈঠকে যেসব বিষয় উঠে এলো

বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ে আবারও নিজেদের অবস্থান জানালেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। আজ (মঙ্গলবার, ১৪ মে) সালমান এফ রহমানের বাসভবনে নৈশভোজে অংশ নিয়ে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে তিনি কথা বলেন। আলোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যু, র‌্যাবের ওপর দেয়া স্যাংশন, জাতীয় নির্বাচন ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসে।

রাত সোয়া ৮টায় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বাসভবনে প্রবেশ করে ডোনাল্ড লুর গাড়িবহর।

নৈশভোজে ডোনাল্ড লুর সঙ্গে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্যুরো অব সাউথ অ্যান্ড সেন্ট্রাল এশিয়ান অ্যাফেয়ার্স প্রধান নেট হ্যাফট ও পলিটিক্যাল ইউনিট প্রধান সারাহ আলদ্রিস। আরও ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ও দূতাবাসের কয়েকজন কর্মকর্তা।

বাংলাদেশের পক্ষে অংশ নেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র মাসুদ বিন মোমেন।

এছাড়া বাংলাদেশি কূটনীতিক ফারুক সোবহান, ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্সের চেয়ারম্যান ও অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমেদ নৈশভোজে অংশ নেন।

রাত ১১টায় ডোনাল্ড লুর বহর ও বাংলাদেশি মন্ত্রী-সচিবরা সালমান এফ রহমানের বাড়ি থেকে একে একে বের হয়ে আসেন।

বৈঠকে আলোচনার বিষয় জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, 'দুদেশেই সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। সেই ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।'

এর পরই সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

তিনি বলেন, 'ওনারা চান সম্পর্কটা আরও ভালো করতে। অনেক খাতে কাজ করতে চায়। আমরাও স্বাগত জানিয়েছি। নির্বাচনের আগে ওনাদের সাথে ভুল বোঝাবুঝি বিষয়টা তোলেননি। ওনারা ট্রাস্ট রিবিল্ড করতে চান। নির্বাচন নিয়ে ওনাদের নিজস্ব অবজারভেশন ছিলো। বাইডেনের চিঠির পরেই তাদের সাথে ইংগেজমেন্ট বেড়েছে। ফিলিস্তিনের বিষয়ে কথা হয়েছে। তারা বলেছে মার্কিন সরকারও একটা সমাধান চায়। তারা সমাধানের দিকে যাচ্ছে। ডলার সংকট নিয়ে কথা হয়েছে। অ্যামেরিকান কোম্পানিদের পেমেন্ট ডিলে হচ্ছে বলে তারা জানিয়েছে।'

তিনি বলেন, 'র্যাবের স্যাংশন ও বঙ্গবন্ধুর খুনির ফেরত আনার ব্যাপারে কথা হয়েছে। তারা বলেছে ওটা তাদের দেশের বিচার বিভাগের বিষয়। তবুও তারা এটা নিয়ে কাজ করবে। ভিসা নীতি নিয়ে কোন কথা হয়নি। তবে জলবায়ু পরিবর্তন ও রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় আবারও ধন্যবাদ দিয়েছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে তারা সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ অবস্থায় সেটা সময় লাগবে বলে জানিয়েছে। শ্রমনীতি ও শ্রম আইনের ব্যাপারে আইএলও যা চেয়েছে তারাও সেটা চায়। আইএলওর সাথে আমাদের কথা বার্তা চলছে।'

পাওয়ার সেক্টরে তারা বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল, ভারতের সাথে কানেক্টিভিটি চায় বলেও জানান সালমান এফ রহমান।

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী এম এ আরাফাত বলেন, 'রাজনীতি নিয়ে কোন কথা হয়নি। বিএনপি নিয়েও কোন কথা হয়নি। খুবই প্রাণবন্ত আলোচনা হয়েছে। মূলত তারা আরও নিবিড়ভাবে বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে চায়। সেই লক্ষ্যেই আলোচনা হয়েছে।'

এর আগে আজ সকালে দুদিনের সফরে বাংলাদেশে পৌঁছান ডোনাল্ড লু। শ্রীলংকান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকায় পৌঁছান। এই সফরে ব্যবসা, বিনিয়োগ, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, নাগরিক অধিকারের বিষয়ে কথা বলবে ঢাকা ও ওয়াশিংটন।

উল্লেখ্য জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হিসেবে এটি ডোনাল্ড লুর প্রথম বাংলাদেশ সফর।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর