অপরাধ ও আদালত
দেশে এখন
0

চূড়ান্ত রায়ের আগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে কনডেম সেলে রাখা যাবে না: হাইকোর্ট

মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির আগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে কারাগারের কনডেম সেলে রাখার সিদ্ধান্ত অবৈধ ও বেআইনি বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আগামী দুই বছরের মধ্যে কনডেম সেলে থাকা আড়াই হাজার আসামিকে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। হাইকোর্টের এ রায়কে যুগান্তকারী বলছেন আইনজীবীরা।

আজ (সোমবার, ১৩ মে ) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করে এই রায় দেন।

বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে কারাগারে নির্জন কনডেম সেলে রাখা হয়। কিন্তু দেখা যায় আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ে আসামি খালাস পান। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার কারনে এতো বছর ফাঁসির কক্ষে নিভৃতে নির্জনে কারাভোগ করতে হয়। যা চরম অমানবিক ও আইন পরিপন্থি বলছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।

২০২২ সালে চট্টগ্রামের একটি মামলায় চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হওয়ার আগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে কনডেম সেলে রাখার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন ১০ আইনজীবী। ওই রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি করে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। রুলে বলা হয়, মামলা নিষ্পত্তির আগে কনডেম সেলে রাখা কেনো বেআইনি হবে না। একইসঙ্গে কনডেম সেলে থাকা আসামিদের সংখ্যা জানাতে বলা হয়।

কারাবিধির ৯৮০ ধারা বাতিল চেয়ে করা রিটের ওপর বিস্তারিত শুনানি শেষে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইনের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বলা হয়, মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির আগে ফাঁসির আসামিকে কনডেম সেলে রাখা যাবে না।

রিটকারি আইনজীবী শিশির মুনীর বলেন, ‘দুই বছরের মধ্যে কনডেম সেলে থাকা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের পর্যায়ক্রমে সরিয়ে নিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হওয়ার আগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে কনডেম সেলে রাখা যাবে না।

তিনি জানান, সরকারের করা নতুন কারাবিধিতে হাইকোর্টের রায়কে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। রায়ের পর্যবেক্ষণে ফাঁসির আসামির জামিন পাওয়ার সুযোগ রাখা আছে।

এছাড়া দেশের কনডেম সেলে থাকা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আগামী দুই বছরের মধ্যে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

চট্টগ্রাম কারাগারে কনডেম সেলে থাকা জিল্লুর রহমানসহ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন বন্দির পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির এই রিট দায়ের করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির আপিল হাইকোর্ট বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে।

রিট আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রাম কারাগারের কনডেম সেলে থাকা সাতকানিয়ার জিল্লুর রহমান, সিলেট কারাগারে থাকা সুনামগঞ্জের আব্দুল বশির এবং কুমিল্লা কারাগারে থাকা খাগড়াছড়ির শাহ আলম।

ইএ