দেশের সর্ব দক্ষিণের দ্বীপজেলা ভোলা। এখানকার মেঘনা, তেঁতুলিয়া নদী ও সাগর মোহনায় প্রায় দুই লাখ মানুষের মাছ শিকারের প্রধান বাহন নৌকা ও ট্রলার। এছাড়াও জেলার দ্বীপচরের পারাপারে খেয়া নৌকা একমাত্র ভরসা।
এসব নৌকা ও ট্রলারের অনেকটাই যোগান দিচ্ছে ভোলার লালমোহন উপজেলার গজারিয়া গ্রাম। সকাল থেকেই কাঠ, হাতুড়ি, পেরেক, ও করাতের ঠুকঠাক শব্দে মুখর হয়ে ওঠে গ্রামটা। কর্মব্যস্ত সময় পার করেন এ গ্রামের শতাধিক মানুষ। কারও যেন দমফেলার সময় নেই। কেউ কাটছে কাঠ, কেউ কাঠের আস্তর তুলছেন, কেউবা মারছেন পেরেক। এভাবেই চলছে ছোট বড় বিভিন্ন আকৃতির নৌকা ও ট্রলার তৈরির কর্মযোগ্য।
নৌকা কারিগররা বলেন, এখন শেষ সময় তাই আমাদের ব্যস্ততা অনেক। আগের কিছু অর্ডার আছে। সব জায়গাতেই এই নৌকার চাহিদা বেশ ভালো।
এ গ্রামের শতাধিক পরিবারের মানুষ জড়িত এ পেশায়। এখানকার কারিগরদের তৈরি নৌকা ট্রলারের সুনাম রয়েছে দেশ জুড়ে। তবে নিত্যপণ্যের পাশাপাশি দাম বেড়েছে নৌকা তৈরির সরঞ্জামের। সে তুলনায় বাড়েনি নৌকার দাম। আকার ভেদে ৭ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয় এখানকার নৌকা। নদীমাতৃক জেলায় নৌকা তৈরির পেশা টিকিয়ে রাখতে সহজ শর্তে ঋণ দেয়ার দাবি কারিগরদের।
ভোলার ঐতিহ্যবাহী এ নৌকা তৈরির শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের নানা কার্যক্রমের কথা জানান বিসিক জেলা কার্যালয়ের উপ-ব্যবস্থাপক এস.এম. সোহাগ হোসেন। বলেন, 'বিভিন্ন ঋণ প্রদান ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমরা তাদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো।'
মৌসুমে ভোলার এই নৌকা হাটে প্রতিদিন প্রায় অর্ধকোটি টাকার নৌকা বিক্রি হয়। বছরে যা দাঁড়ায় প্রায় ৩০ কোটি টাকা। সরকারি সহায়তা পেলে পিছিয়ে থাকা এ শিল্প জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।