নোয়াখালীর সুবর্ণচরের মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা ৮০ বছরের আবদুল মমিন। মেঘনার করাল গ্রাসে ভিটেমাটি হারিয়ে পরিবারসহ ঠিকানা বদলেছেন তিনবার। বর্তমানে চর-মাকছুমুল গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন অন্যের জমিতে। তবে গত কয়েক মাস ধরে যে ভাঙন চলছে তাতে এ বসতিও হারানোর শঙ্কায় তিনি।
আবদুল মমিন বলেন, 'নদী সব ভেঙে নিয়ে যাইতেছে। এখন আমি যাবো কই, আমার যাওয়ার কোন জায়গা নাই।'
শুধু মমিন নয়, বর্তমানে মেঘনার আগ্রাসী ভাঙনের কবলে মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের তিন গ্রামের অন্তত তিন হাজার পরিবার। আর গত ৬ মাসেই মেঘনা ঘর ছাড়া করেছে ১২শ' পরিবারকে। বিলীন হয়েছে কয়েকটি বাজার, হাজার-হাজার একর কৃষি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
শুষ্ক মৌসুমের এমন ভাঙন দেখার পর বর্ষায় আগ্রাসী মেঘনার কথা ভেবে আতঙ্কিত নদী পাড়ের মানুষ। এমন অবস্থায় নিজের শেষ সম্বল রক্ষায় ব্যস্ত তারা।
স্থানীয়রা বলেন, বিগত একবছর ধরে এই ভাঙন তীব্র আকারে শুরু হইছে। যে কারণে কয়েক হাজার পরিবার অন্যত্র চলে গেছে। আরও প্রায় ২ থেকে আড়াই কিলোমিটার পর্যন্ত বসতি ছিলো।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সী আমির ফয়সাল বলেন, 'মেঘনার ভাঙন রোধে বিভিন্ন এলাকায় একাধিক প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে, পর্যায়ক্রমে মোহাম্মদপুরেও কাজ হবে। ডিপিপি মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা হয়েছে। আশা করছি অনুমোদন করাতে পারবো।'
বছরের পর বছর ধরে চলা মেঘনার ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়েছেন নোয়াখালীর উপকূলের লাখো মানুষ। বিভিন্ন সময় কিছু কিছু এলাকায় বেড়ি বাঁধ নির্মাণ হলেও তা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। এমন অবস্থায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।