দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী পাইকারি শুঁটকি মাছ কেনাবেচার স্থান জামালপুরের 'রানীগঞ্জ হাট'। একসময় নানা পণ্যের সমাহারে জমজমাট থাকলেও এখন টিকে আছে কেবল একটি উপকরণ ঘিরেই। চট্টগ্রাম থেকে পাইকাররা শুঁটকি এনে সরবরাহ করেন আশপাশের জেলায়। তাই বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীদের আনাগোনা দোকানগুলোতে।
শুরু থেকেই সপ্তাহের শনিবার ও মঙ্গলবার এ দুই দিন বসে হাট। তবে শুক্রবার বাদে সপ্তাহের ৬দিনই দোকানগুলো খোলা থাকে। প্রতিটি দোকানে দৈনিক ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকার বেশি কেনাবেচা করে। তবে হাটের দিন বেচা বিক্রি তুলনামূলক বেশি হয়।
একজন ব্যবসায়ী বলেন, 'হাটের দিনে মুটামুটি কিছু লোক হয়। আর তাছাড়া তেমন মানুষ হয় না। সপ্তাহে শুক্রবারে বন্ধ থাকে। দিনে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকার মতো বেচাকেনা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে যদি আমাদের জন্য একটা হিমাগার করে দেয়া হয় তাহলে আমাদের সুবিধা হয়।'
স্থানীয়রা জানান, আগে ১০ একরেরও বেশি জায়গাজুড়ে সপ্তাহে ২ দিন হাট বসতো। দিনে দিনে নানা কারণে ছোট হয়েছে পরিধি। হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে এবং ব্যবসা সচল রাখতে আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণের দাবি তাদের।
স্থানীয় একজন বলেন, 'বাজারের বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের মাধ্যমে এ বাজারকে যেন আবার আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনা হয়। যেন আবার নতুন করে জামালপুরের প্রাণকেন্দ্র হতে পারে।'
জামালপুর পৌরসভা মেয়র মো. ছানোয়ার হোসেন ছানু জানান, নানা কারণে জর্জরিত শত বছরের পুরনো হাটটি সচল রাখতে চেষ্টা চলছে। পৌরসভার পক্ষ থেকে বাজারের জায়গা নির্ধারণ করে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে শেড ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ কাজ হাতে নেয়া হয়েছে।
ছানোয়ার হোসেন বলেন, 'সরকার থেকে বরাদ্দ হওয়ার পর আমরা কাজ শুরু করবো। জায়গাটিতে আমরা নতুন করে শেড করছি। আগেরমতো না হলেও নতুন রুপে এ বড় হটের প্রাণ ফিরে আনতে পারবো।'
১৯১৩ সালে নাটোরের রাণী দেবী চৌধুরাণী তার নামানুসারে প্রায় ১০ একর জায়গাজুড়ে রানীগঞ্জ হাটটি স্থাপন করেন।