রোববার (১৭ মার্চ) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৪ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
১০৪ বছর আগে যে ছায়া সুনিবিড় গ্রাম টুঙ্গিপাড়ায় জন্মেছিলেন স্বাধীনতার মহানায়ক, আজ সেই গ্রামে বসেছে শিশুদের মেলা। বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধের পাশে আয়োজন করা হয় জাতীয় শিশু দিবসের অনুষ্ঠান।
টুঙ্গিপাড়ায় জাতীয় শিশু দিবসের অনুষ্ঠানে। ছবি: এখন টিভি
শিশুদের উপস্থাপনা ও সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শিশু সমাবেশে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অভিভাবক, স্থানীয় রাজনীতিবিদ, আমলাসহ অনেকে।
বঙ্গবন্ধুর জীবনীর ওপর চার ক্যাটাগরিতে শ্রেণীভিত্তিক সাহিত্য ও সংস্কৃতি প্রতিযোগিতার পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেন আর্থিক অনুদান দেন।
সাহিত্য ও সংস্কৃতি প্রতিযোগিতার পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। ছবি: এখন টিভি
শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর অবদান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে শিশুদের ট্রাফিক আইন মেনে চলার পাশাপাশি, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীলতা ও অপচয় বন্ধের শিক্ষা দিতে হবে।’
তিনি বলেন, 'স্কুলগুলোয় আমরা কম্পিউটার ল্যাব করে দিচ্ছি। ল্যাবের পাশাপাশি আমরা সারা বাংলাদেশে কম্পিউটার ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। প্রযুক্তি শিক্ষা যেন শিশুকাল থেকেই পায় সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে।'
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় পড়াশোনার পাশাপাশি শিশুদের খেলাধুলা ও সংস্কৃতি চর্চার পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘লেখাপড়ায় শিশুদের অতিরিক্ত চাপ দেয়া যাবে না।’
সরকারপ্রধান বলেন, 'যারা প্রতিবন্ধী, অটিস্টিক শিশু- তাদের সঙ্গে কেউ যেন দুর্ব্যবহার না করে। তাদেরকেও যেন আপন করে নেয়। সেইভাবে শিশুদের শিক্ষা দিতে হবে। প্রতিবন্ধী যারা আছে তাদেরকে কোনোরকম উত্ত্যক্ত না করা হয়। সহানুভূতিশীল দৃষ্টিতে দেখতে হবে । সেই শিক্ষা পরিবার থেকে সর্বস্তরে দিতে হবে। পাশাপাশি যেকোনো অপচয় বন্ধ করার ব্যবস্থা নিতে হবে। খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক চর্চা ও বই পড়ার দিকে এখন থেকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য আমি সবাইকে অনুরোধ জানাই। আমরা চায় আমাদের দেশ এগিয়ে যাক।’
গাজায় শিশুদের হামলার পরও বিশ্বের মানবাধিকার বোধ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ সবসময় নির্যাতিত মানুষের পাশে আছে।’
তিনি বলেন, 'গাজায় শিশুদের ওপর যখন বোমা ফেলা হয়, হত্যা করা হয়, হাসপাতালে বোমা ফেলা হয়, ফিলিস্তিনিদের ওপর যখন আক্রমণ করা হয় তখন আমি জানি না এই মানবাধিকার সংরক্ষণ সংস্থাগুলো কোথায় থাকে। তাদের সেই মানবিকতা বোধ কোথায় থাকে। সেটাই আমার প্রশ্ন?
গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় দিবসের সঠিক ইতিহাস, শিশুদের জানাতে অভিভাবকদের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, এরপর ফুল দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তারা।
বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সময়। ছবি: এখন টিভি
এ সময় রাষ্ট্রীয় সম্মাননা জানায় তিন বাহিনীর চৌকস দল। বিউগলে বেজে ওঠে সুর। ফাতেহা পাঠ ও দোয়া মোনাজাতে অংশ নেন উপস্থিত সকলে।
পরে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আরও একবার ফুল দেন প্রধানমন্ত্রী।