দেশে এখন
0

সুনামগঞ্জে সময় বাড়িয়েও শেষ হয়নি বাঁধের কাজ

সুনামগঞ্জ

দুই দফা সময় বাড়ানোর পরও শেষ হয়নি সুনামগঞ্জের হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ। এতে সময়মতো ফসল ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কিত কৃষকরা।

সুনামগঞ্জ জেলার প্রায় ৩০ লাখ মানুষ একমাত্র বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল।

তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের মাটিয়ার হাওরে ৬০-৬৩ নং প্রকল্পে এখনো চলছে মাটি ফেলার প্রাথমিক কাজ। অথচ মাস দেড়েক আগে শুরু হওয়া কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিলো গত ২৮ ফেব্রুয়ারি।

দ্বিতীয় মেয়াদে আরও ১ সপ্তাহ বাড়ালেও কাজের তেমন অগ্রগতি নেই। যে অবস্থায় আছে তা শেষ করার পর বাকি প্রক্রিয়াগুলো শেষ করতে আরও অন্তত ১৫-২০ দিন সময় লাগবে। আর বৃষ্টি হলে ধীরগতি আরও বাড়বে।

এমন চিত্র শুধু যে এই প্রকল্পের তা নয়, বরং মাটিয়ান হাওরসহ জেলার দোয়ারা বাজার, মধ্যনগর, শাল্লা ও ধর্মপাশাসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার হাওরের বাঁধের কাজ অসম্পূর্ন রয়ে গেছে দ্বিতীয় মেয়াদেও।

প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি বলছে, নানা জটিলতার কারণে এখনও কাজ সম্পন্ন করা যায়নি।

সময় বাড়িয়েও শেষ করা যায়নি বাঁধের কাজ। ছবি: এখন টিভি

জেলাটির হাওরের ফসল রক্ষার জন্য সরকার প্রতিবছর নির্ধারিত সময়ের আগে প্রকল্পের অর্থ বরাদ্ধ দিলেও কখনও সময়মতো কাজ শেষ করতে পারছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটেনি।

যদিও তাদের দাবি, হাওরে প্রকল্পের ৯৫ শতাংশেরও বেশি কাজ শেষ হয়েছে। হাওর বাচাঁও আন্দোলনের নেতারা বলছেন, পুরো জেলাজুড়ে হাওরে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে ৫৫-৬০ শতাংশ। আর এতেই ফসল রক্ষা নিয়ে শঙ্কিত জেলার ১০ লাখ কৃষক।

স্থানীয় চাষিরা বলেন, ‘আমরা যে ফসলটা লাগাইসি যদি কোনো রকমনষ্ট হইয়া যায়, তাইলে তো আমরা মরা। এই একটা ধানেই আমাদের সম্বল। বাঁধের অবস্থা দেখলে তো মাথা খারাপ হইয়া যায়।’

প্রতিবছর বাঁধ নির্মাণ, সংস্কার ও মেরামতের কাজ ১৫ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা। এ বছরও ১৫ ডিসেম্বর কাজ শুরু হয় কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ না হওয়ায় বাড়ানো হয় মেয়াদ। তারপরও শেষ হয়নি শতভাগ কাজ। যাতে কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকে দুষছেন তদারকিতে থাকা সংশ্লিষ্টরা।

হাওরে এখনো চলছে মাটি ভরাটের কাজ। ছবি: এখন টিভি

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, ‘এবার তাদের তদারকি কম। প্রশাসন আর পানি উন্নয়ন বোর্ড যেভাবে পার্সেন্টেজের খাতা খুলে দেখাচ্ছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট নই। সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই এ বাঁধগুলো টিকবে না। অধিকাংশ জায়গায় মাটির বদলে বালির বাঁধ তৈরি করা হয়েছে।‘

এরই মধ্যে তাদের কাজের ৯৫ শতাংশ শেষ হয়েছে আর বাকি কাজ শিগগিরই শেষ করার কথা জানান সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার।

তিনি বলেন, ‘আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা নিয়মিত তদারকি করছেন। এতে কোনো ঘাটতি নেই। গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোয় আমাদের কাজ শেষ। এখন দুই-একটা অল্প পরিমাণে কাজ বাকি আছে। আশা করছি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ হবে।’

সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলায় এবার বোরো ফসল রক্ষায় বাঁধ নির্মাণের জন্য ১৩০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে। পুরো জেলায় ১ হাজার ৭১৮ কিলোমিটার হাওর রক্ষা বাঁধের মধ্যে ৭৩৩টি অংশে ৫৯১ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ কাজ করার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর