কয়েকদিন ধরে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তসহ নাফ নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে রোহিঙ্গারা। ছোট-ছোট নৌকায় তারা ঢোকার চেষ্টা করলেও তাদেরকে ফিরিয়ে দিয়েছে বিজিবি। যদিও নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টায় আতঙ্কে সীমান্তবাসী।
এদিকে রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নাফ নদীর ওপার থেকে থেমে থেমে গোলাগুলি ও ভারী গোলাবর্ষণের শব্দ পাওয়া যায়। তবে নাফ নদী পেরিয়ে সেই শব্দ এপারে আসে কিছুটা ক্ষীণ হয়ে। গত কয়েকদিনে মাঝে মধ্যেই বিকট শব্দে কেঁপেছে টেকনাফ সীমান্তের ঘরবাড়ি।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সেখানকার সশস্ত্র গোষ্ঠীর যে সংঘাত চলছে তাতে আবারও এ সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সর্বশেষ শনিবার বিকেলে এ সীমান্তের জেটিঘাট দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে ৫ জন রোহিঙ্গা। যাদের মধ্যে ছিলেন একজন গুলিবিদ্ধ নারী। তবে সেই চেষ্টা প্রতিহত করার কথা জানিয়েছে বিজিবি। এরপর থেকে অনুপ্রবেশের শঙ্কায় শাহপরীর জেটিঘাট এলাকায় যান চলাচল ও লোকজনের চলাফেরা সীমিত করেছে বিজিবি। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরে নাফ নদীর ওপারে পাওয়া যাচ্ছে থেমে থেমে গোলাগুলি ও ভারী গোলাবর্ষণের শব্দ। এতে সীমান্তের বাসিন্দাদের মাঝে উৎকন্ঠা যেমন আছে, তেমন আছে অনুপ্রবেশ নিয়ে শঙ্কা।
স্থানীয়রা বলেন, নাফ নদী হয়ে ছোট-ছোট নৌকায় প্রবেশের চেষ্টা করছেন রোহিঙ্গারা। যেকোন সময় তারা চলে আসতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।
মিয়ানমারের থেকে দেশটির সরকারি বাহিনীর নির্যাতন-নিপীড়নের মুখে ২০১৭ সালে পালিয়ে আসে সাড়ে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। বর্তমানে নতুন-পুরনো মিলিয়ে কক্সবাজারের ৩৪টি আশ্রয় শিবিরে ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার বসবাস। যেখানে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সংঘাত লেগেই রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে নতুন অনুপ্রবেশের শঙ্কায় উদ্বিগ্ন খোদ রোহিঙ্গারা।
রোহিঙ্গারা বলেন, ‘আমরা নিরাপত্তা চাই, এখানে শান্তিতে থাকতে চাই।’
এমন পরিস্থিতিতে জল ও স্থল সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধে নজরদারি বাড়িয়েছে বিজিবি ও কোস্টগার্ড। সতর্ক রয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আদনান চৌধুরী বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। যেকোন অনুপ্রবেশ বন্ধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেবো।’
গত এক মাসে দুইশো'র বেশি রোহিঙ্গাকে পুশব্যাক করার কথা জানিয়েছে বিজিবি ও কোস্টগার্ড।